Bhangar TMC

ফের সভাপতি নির্বাচিত আরাবুল, ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিলের অভিযোগ

এ দিন বোর্ড গঠন উপলক্ষে ভাঙড় ২ ব্লক দফতর সংলগ্ন এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৩ ০৭:০৬
Share:

১৪৪ ধারা অমান্য করে মিছিল করে ব্লক অফিসে বোর্ড গঠনে হাজির তৃণমূল। — নিজস্ব চিত্র।

ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হলেন আরাবুল ইসলাম। ২০১৩ সালে তিনি সভাপতি ছিলেন। পরে ২০১৮ সালে সহ সভাপতি হন। শনিবার পঞ্চায়েত সমিতির নতুন বোর্ড গঠন হয়। সেখানে তিনি আবার সভাপতি হলেন। সহ সভাপতি হয়েছেন সোনালি বাছাড়।

Advertisement

এ বার ভাঙড় ২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়। বাকি ১৬টি আসনে ভোট হয়। তার মধ্যে তৃণমূল পায় ৮টি আসন, জমি কমিটি পায় তিনটি আসন ও আইএসএফ পায় ৫টি আসন। আইএসএফ এ দিন বোর্ড গঠন বয়কট করে। ফলে তৃণমূল ও জমি কমিটির ২৫ জন সদস্য বোর্ড গঠনে অংশগ্রহণ করেন। সভাপতি হিসেবে আরাবুল ইসলামের নাম প্রস্তাব করে তৃণমূল। জমি কমিটি পাল্টা তাদের প্রার্থী নিজামুদ্দিন মোল্লার নাম প্রস্তাব করে। উভয় পক্ষের ভোটাভুটিতে ২২-৩ ফলে জয়ী হন আরাবুল। তবে সহ-সভাপতি পদ নিয়ে কোনও ভোটাভুটি হয়নি।

সভাপতি হয়ে আরাবুল বলেন, “আমরা মানুষের জন্য কাজ করব। কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিটি বাড়িতে যাব। মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনব। তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী এলাকার উন্নয়ন হবে।”

Advertisement

এ দিন বোর্ড গঠন উপলক্ষে ভাঙড় ২ ব্লক দফতর সংলগ্ন এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা। সেই ১৪৪ ধারা অমান্য করে ব্লক দফতর থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে কাঁঠালিয়া চৌমাথায় পথসভা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পথসভা শেষে সওকাত মোল্লা, আরাবুল, হাকিমুল, কাইজার আহমেদদের নেতৃত্বে কয়েকশো তৃণমূল কর্মী সমর্থক মিছিল করে ব্লক অফিসে যান। গোলমাল এড়াতে এ দিন ব্লক দফতরের সামনে মোতায়েন ছিল প্রচুর পুলিশ। সেখানেই সকলকে আটকে দেওয়া হয়। পরে সওকাত, আরাবুলদের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের ২২ সদস্য ব্লক দফতরে ঢোকেন।

ভিড় করে পথসভা প্রসঙ্গে সওকাত মোল্লা বলেন, “আইএসএফ যে সন্ত্রাস করেছে, যে রক্ত ঝরেছে, তার বিরুদ্ধে এটা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ। তবে আমরা কোনও গন্ডগোল হতে দিইনি। ব্লক অফিসের ভিতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।” জমি কমিটিকে কটাক্ষ করে সওকাত বলেন, “পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েত এলাকায় বেশ কিছু মাওবাদী রয়েছে। অলীক চক্রবর্তীর সঙ্গে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। সন্ত্রাসমুক্ত ভাঙড় গড়তে গেলে অলীক-সহ মাওবাদীদের গ্রেফতার করতে হবে। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, অবিলম্বে এদের গ্রেফতার করার জন্য।”

জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান পাল্টা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অলীক চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রীকে বসতে হয়। সেই অলীক চক্রবর্তীকে গ্রেফতারের কথা বলবেন উনি? ও যাকে ইচ্ছা বলতে পারে, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা ভয় পাই না।”

ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতিতেও বোর্ড গঠন হয়েছে এ দিন। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ঝর্না মণ্ডল। তিনি আগে ওই পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ছিলেন। এ বার সহ-সভাপতি হয়েছেন যুব তৃণমূল নেতা এমএম সফি আহমেদ। এর আগে ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন শাহজাহান মোল্লা। তিনি এ বারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জিতেছিলেন। কিন্তু সংগঠনের কাজে সময় দিতে ওই পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৭টি আসনই এ বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। ঝর্না বলেন, “এ বার পঞ্চায়েত সমিতিতে নবীন ও প্রবীণের মেলবন্ধন হয়েছে। নতুন বোর্ড মানুষের জন্য কাজ করবে।”

ভাঙড়ে নতুন বোর্ড গঠন প্রসঙ্গে এলাকার বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওসাদ সিদ্দিকী বলেন, “এই বোর্ড আমরা মানি না। মানুষের রায় নিয়ে এই বোর্ড গঠন করা হয়নি। গণতন্ত্রকে হত্যা করে বোর্ড গঠন করা হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement