দুই জেলায় একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল সিপিএমের হাত থেকে ছিনিয়ে নিল তৃণমূল।
বসিরহাটের সন্দেশখালির দুর্গামণ্ডপ এবং হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ পঞ্চায়েত দু’টিতে সিপিএমের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল তৃণমূল। মঙ্গলবার ভোটাভুটিতে দুর্গামণ্ডপ পঞ্চায়েতে ১৫-০ ব্যবধানে এবং যোগেশগঞ্জ পঞ্চায়েতে ১০-০ ব্যবধানে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ভোটাভুটির সময়ে দু’জায়গাতেই প্রধান উপস্থিত ছিলেন না।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গামণ্ডপ পঞ্চায়েতে ১৭টি আসন। গত পঞ্চায়েত ভোটের পরে সেখানে সিপিএম ৯টি, সিপিআই ২টি এবং তৃণমূলের দখলে ৬টি আসন আসে। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে বিভিন্ন জায়গার মতো বামপন্থীদের একটা বড় অংশ শাসকদলের দিকে ঢলে পড়ে। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দুর্গামণ্ডপ পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান দেবরঞ্জন অধিকারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে তৃণমূল অনাস্থা আনে।
যোগেশগঞ্জ পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন সিপিএমের নমিতা পরামানিক। মোট আসন ১৭টি। সিপিএমের ছিল ৯টি, নির্দল ১টি এবং তৃণমূলের হাতে ছিল ৭টি আসন। সম্প্রতি সিপিএমের প্রধানের বিরুদ্ধে একই ভাবে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা এনেছিল তৃণমূল।
সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সদস্য মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল যে ভাবে আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে সর্বত্র ভয় দেখানো শুরু করেছে, তাতে এ রাজ্যে আর কোনও বিরোধী আসনই থাকবে না।’’ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘সর্বত্র মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নযজ্ঞের শরিক হতে চাইছেন। সে কারণে সিপিএম সদস্যেরা তৃণমূলে যোগ দিয়ে কাজ করতে চাইছেন। সকলকে দলে স্বাগত।’’
সাগরের রামকরচর পঞ্চায়েতে ৭ জন সিপিএম কর্মী গত ডিসেম্বর থেকে মে মাসের মধ্যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তারপরেই সিপিএমের দখলে থাকা ওই পঞ্চায়েতের প্রধান গৌরী মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছিল। মঙ্গলবার ছিল অনাস্থার উপরে ভোটাভুটি। জিতে যান তৃণমূলের মালা সিংহ। এতে রামকরচর তৃণমূলের হাতে চলে এল। ২২ জন সদস্যের ওই পঞ্চায়েতে আগে সিপিএম এবং তৃণমূল ১১টি করে আসনে জয়ী হয়েছিল। তবে ৭ জন তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তৃণমূল সদস্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮। সিপিএমের সদস্য কমে হয় ৪ জন।
এই পঞ্চায়েতে অনাস্থা নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছিল। সিপিএম নেতা মিলন পড়ুয়ার অভিযোগ, নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে তাদের সদস্যদের তৃণমূল নিজেদের দিকে টেনে নিচ্ছে।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরার কথায়, ‘‘২০১১ সালের পর সিপিএমের পায়ের তলায় যেটুকু মাটি ছিল, তা সরে গিয়েছে। তাই এখন সেই লজ্জা ঢাকতে হুমকির অভিযোগ তুলছেন ওঁরা।’’