ভাঙড় ২ ব্লক প্রশাসনের দফতরে পুলিশের পাহারা। ছবি: সামসুল হুদা Sourced by the ABP
সরকারি দফতরে শাসক দলের দলীয় বৈঠককে ঘিরে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। দুই গোষ্ঠী মারমুখী হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হয় আসে পুলিশ। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড় ২ ব্লক প্রশাসনের দফতরে। সরকারি দফতরে কেন শাসক দলের দলীয় বৈঠক হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘গন্ডগোলের খবর পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’
এ দিন ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে ভগবানপুর ও চালতাবেড়িয়া অঞ্চলের তৃণমূলের কমিটি গঠন নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়। উপস্থিত ছিলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম, আব্দুর রহিম মোল্লা, হাকিমুল ইসলাম, আব্দুল ওদুত, মোমিনুল ইসলাম, কাশেফুল করুব খান, খয়রুল ইসলামেরা। অভিযোগ, চালতাবেড়িয়া অঞ্চল নিয়ে বৈঠক শেষে যখন ভগবানপুর অঞ্চল নিয়ে বৈঠক শুরু হয়, তখনই শুরু হয় গন্ডগোল। ভগবানপুর অঞ্চল কমিটিতে কারা থাকবে, তা নিয়ে আরাবুল গোষ্ঠীর সঙ্গে বিরোধ বাধে যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি খয়রুল ইসলাম গোষ্ঠীর।
বৃহস্পতিবার একটি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পাকাপোল এলাকায় মিক্সিং প্লান্টে তালা লাগিয়ে দেওয়া নিয়েও বিরোধ তৈরি হয়েছিল এই দুই গোষ্ঠীর। এ দিনও পঞ্চায়েত সমিতির ওই বৈঠকে মিক্সিং প্লান্টে তালা লাগিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ ওঠে। তা নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হয়। উভয় গোষ্ঠীর অনুগামীরা ব্লক প্রশাসনের দফতরের সামনে ভিড় জমায়। সরকারি অফিসে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষ ভয় পেয়ে যান। খবর পেয়ে কাশীপুর থানার পুলিশ আসে। নিরাপত্তার কারণে এক সময়ে মূল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশ দু’পক্ষের অনুগামীদের বের করে দেয়।
এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, ‘‘তৃণমূল শাসক ও সরকার— এই দু’টি বিষয় গুলিয়ে ফেলেছে। এ জন্যই এত অরাজকতা, অশান্তি। সরকারি অফিসগুলিকে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছে।’’ সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘ওরা দীর্ঘ দিন ধরেই সরকারি কার্যালয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করছি। ব্লক প্রশাসনকে অনুরোধ করব, তারা যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়।’’
দলের অন্দরে গোলমাল প্রসঙ্গে খয়রুল বলেন, ‘‘একটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে নিজেদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।’’ ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লার কথায়, ‘‘উভয়পক্ষকে এক জায়গায় বসিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়া হয়।’’
সরকারি কার্যালয়ে তৃণমূলের বৈঠক সংক্রান্ত অভিযোগ উড়ে দিয়ে আরাবুল বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে কোনও দলীয় কর্মসূচি ছিল না। অফিসে বসে কয়েক জনকে নিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল।’’ তাঁর দাবি, কিছু লোকজন হঠাৎ ঢুকে পড়ায়বিশৃঙ্খলা হয়। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।