দুই জেলায় ক্রমশ সঙ্কটে বিরোধী অস্তিত্ব
BJP

TMC: বনগাঁয় বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত দখল তৃণমূলের

গত পঞ্চায়েত ভোটে ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল আটটি আসন। তৃণমূল পায় ছয়টি আসন। দু’টি আসনে নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

বনগাঁ শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

গাইঘাটার বিজেপি পরিচালিত ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েতের দখল নিল তৃণমূল। এর ফলে একসময় বিজেপির খাসতালুক হয়ে ওঠা বনগাঁ মহকুমার সবক’টি পঞ্চায়েতই তৃণমূলের হাতে চলে এল।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত ভোটে ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল আটটি আসন। তৃণমূল পায় ছয়টি আসন। দু’টি আসনে নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হন। প্রধান হয়েছিলেন বিজেপির নীলাদ্রি ঢালি।

এ দিন দুপুরে নীলাদ্রি-সহ সুভদ্রা মণ্ডল, বাসন্তী বাছার এবং দীনেশ সরকার বনগাঁয় জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে আসেন। এদের মধ্যে দীনেশ নির্দল হিসাবে জয়ী হয়েছিলেন। বাকিরা বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন। চার সদস্য তৃণমূলে যোগদান করায় ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের আসন সংখ্যা এখন ১০।

Advertisement

এ দিন জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে প্রধান-সহ চার সদস্যের হাতে দলীয় পতাকা, ফুলের স্তবক, দলীয় পতাকা, উত্তরীয় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি তুলে দেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠ এবং সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান শঙ্কর দত্ত। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি নারায়ণ ঘোষ, গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস-সহ অনেকে।

গোপাল বলেন, “প্রধান-সহ চার জন সদস্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তৃণমূলে আসার আবেদন করেছিলেন। আমরা দলীয় নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে দলে যোগদান করিয়েছি। বনগাঁ মহকুমায় আর কোনও বিরোধী পঞ্চায়েত থাকল না।”

নীলাদ্রি বলেন, “প্রধান হিসাবে এলাকার উন্নয়ন করতে পারছিলাম না। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে উন্নয়নের স্রোত চলছে তাতে সামিল হয়ে মানুষের পাশে থেকে তাঁদের পরিষেবা দিতে চাই। সেই কারণে তৃণমূলে যোগদান করেছি।” শঙ্করের দাবি, ওই পঞ্চায়েতের আরও তিন বিজেপি সদস্যও তৃণমূলে যোগদান করছেন।

বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস অবশ্য বলেন, “অনেক দিন ধরেই প্রধান তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। তিনি শিক্ষকতার চাকরি থেকে সাময়িক অবসর নিয়ে প্রধান হয়েছিল। তৃণমূল তাঁর চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল। পাশপাশি পঞ্চায়েতের কাজে তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। এ সব কারণেই গিয়েছেন। তবে মানুষের সমর্থন আমাদের সঙ্গেই আছে।”

প্রধান অবশ্য তাঁকে প্রলোভন বা ভয় দেখানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বনগাঁয় জয়ী হয় বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটেও মহকুমার ৪টি আসনে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিধানসভা ভোটে সাফল্য পাওয়ার পর থেকেই বনগাঁয় বিজেপির কোন্দল চরম আকার নেয়। দলে দলে কর্মীরা তৃণমূলে যোগদান করতে থাকেন। বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূলে যোগদান করেন। এর জেরেই সদ্য সমাপ্ত পুরসভা ভোটে বনগাঁ পুরসভার ২২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপি পায় ১টি ওয়ার্ড।

গত পঞ্চায়েত ভোটে বনগাঁ মহকুমার ৩৮টি পঞ্চায়েতের মধ্যে বিজেপি ৪টি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেছিল। ধর্মপুর ২ ছাড়াও গতবার বিজেপি জিতেছিল বাগদা ব্লকের সিন্দ্রাণী এবং কোনিয়াড়া ২, বনগাঁ ব্লকের চৌবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতে। এর মধ্যে বিধানসভা ভোটের পরেই সিন্দ্রাণী, কোনিয়াড়া ২ ও চৌবেড়িয়া দখল করে নিয়েছিল তৃণমূল। এবার ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েতও হাতছাড়া হল বিজেপির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement