ফুটবলের তোড়জোড়। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল নতুন ঘটনা ন। কিন্তু একেবারে অন্য ছবি দেখা গেল গোসাবার পাঠানখালি এলাকায়। সেখানে তৃণমূলের সমস্ত শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে নিজেদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করলেন। শনিবার বিকেলে পাঠানখালি আদর্শ বিদ্যামন্দিরের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় চার দলের প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা। গত কয়েক বছর ধরেই ক্যানিং, বাসন্তী এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল চরমে উঠেছে। একাধিক খুন-জখমের ঘটনাও ঘটেছে। বহু কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট হয়েছে। দু’তিন দিন আগেও এলাকা দখলের লড়াইয়ে বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েত এলাকায় বোমাবাজি হয়। বাসন্তী ব্লকে গোষ্ঠীকোন্দল থাকলেও গোসাবা ব্লকের পাঠানখালি এলাকায় সম্পূর্ণ উল্টো ছবি। সেখানে তৃণমূলের মূল সংগঠনের সঙ্গে সমস্ত শাখা সংগঠনের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে নেতাদের দাবি। আর সেই সুসম্পর্ককে আরও মজবুত করতে দলের কর্মীরা প্রতিবছর একত্রিত হয়ে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।
এ বার চার বছরে পড়ল এই প্রতিযোগিতা। শনিবার প্রতিযোগিতায় চারটি দল যোগ দেয়। পাঠানখালি তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি একাদশ, পাঠানখালি যুব তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি একাদশ, পাঠানখালি তৃণমূল সুপারভাইজার একাদশ ও পাঠানখালি কিষান খেতমজুর একাদশের মধ্যে খেলা হয়। ফাইনালে সুপারভাইজার একাদশকে ১-০ গোলে হারিয়ে যুব তৃণমূল একাদশ প্রতিযোগিতার সেরার শিরোপা জিতে নেয়।
অঞ্চল সভাপতি সুবিদ আলি ঢালি বলেন, ‘‘কাজ করতে গেলে নিজেদের মধ্যে সামান্য মনোমালিন্য ঘটে থাকে। যাতে সেই সব মনোমালিন্য থেকে নিজেদের মধ্যে বিবাদ না বাধে, তাই সকলকে নিয়েই প্রতিবছর এই প্রীতি ফুটবলের আয়োজন করা হয়। এতে একে অন্যের সঙ্গে বন্ধুত্ববোধ, ভালবাসা, সম্মানবোধ বজায় থাকে।’’এ দিনের প্রতিযোগিতা দেখতে কয়েক হাজার মানুষ মাঠে উপস্থিত ছিলেন। করোনা আবহে কী ভাবে তৃণমূল নেতৃত্ব এমন আয়োজন করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী নেতৃত্ব। গোসাবার বিজেপি নেতা সৌমেন কামিলা বলেন, ‘‘বিজেপি কিছু করতে গেলেই তখন পুলিশ-প্রশাসন বাধা দেয়। আর এখানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত করে ফুটবল খেলা হল। তাতে পুলিশ বাধা দিচ্ছে না। তৃণমূল নেতৃত্বই বা কী ভাবে এই আয়োজন করলেন?’’
সুবিদ বলেন, ‘‘অনেক বড় মাঠে খেলা হয়েছে। ফলে মানুষজন শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই খেলা দেখেছেন। তা ছাড়া, পাঠানখালি এলাকায় সে ভাবে সংক্রমণ ছড়ায়নি। তাই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।’’ গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, ‘‘গোসাবা বিধানসভার মধ্যে কোথাও তৃণমূলের কোনও শাখা সংগঠনের সঙ্গে মূল সংগঠনের বিবাদ নেই। আমরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। যাতে নিজেদের মধ্যে কোনও মনোমালিন্য না থাকে, সে কারণেই এই ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।’’