বাড়ি বাড়ি তৃণমূলের জনসংযোগ বাগদায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
তাদের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় সোমবার থেকে বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করল তৃণমূল। বনগাঁ লোকসভা আসনটি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি বলে মনে করছেন অনেকে।
এ দিন সকালে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বাগদা পঞ্চায়েতের দেয়ালদহ, সাগরপুর ও বাগদায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুদেবী মণ্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পরিতোষ সাহা এবং বাগদা পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জিৎ সর্দার।
বিশ্বজিৎ এ দিন হেঁটে প্রায় দেড়শো বাড়িতে যান। তার মধ্যে এক বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িও রয়েছে। গ্রামের যে সব মানুষ একশো দিনের কাজ প্রকল্পে দীর্ঘ দিন টাকা পাচ্ছেন না, যাঁরা এখনও কাঁচা বাড়িতে থাকেন, তাঁদের বাড়িতেও যান তিনি। মতুয়া, নমঃশূদ্র, উদ্বাস্তুদের মধ্যে যাঁরা নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় রয়েছেন, তাঁদের বাড়িতেও হাজির হন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, লোকসভা ভোটের আগে ওই সব মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব নিজেদের পালে হাওয়া টানতে চাইছে।
বিশ্বজিৎকে সামনে পেয়ে অনেকেই এ দিন ক্ষোভ উগরে দেন বাসিন্দারা।একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বিশ্বজিৎকে অনুরোধ করেন গ্রামবাসীরা। বিশ্বজিৎ গ্রামবাসীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, “আমরা ৩০ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে কেন্দ্র টাকা না দিলে রাজ্য সরকারই আপনাদের বকেয়া টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। আবাস যোজনার পাকাবাড়ি তৈরি করতে রাজ্য সরকার ৪০ শতাংশ টাকা দেয়। কেন্দ্র টাকা না দিলে রাজ্য সরকারই বাড়ি তৈরি করে দেবে।”
উদ্বাস্তু ও মতুয়াদের উদ্দেশে বিশ্বজিৎ বলেন, “আপনারা ভোট দেন। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড আছে। আপনারা ইতিমধ্যেই নাগরিক। এ কথা মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলে দিয়েছেন। কেউ আপনাদের এ দেশ থেকে তাড়াতে পারবে না। বিজেপি নাগরিকত্ব নিয়ে আপনাদের ভাঁওতা দিয়েছে।”
গত লোকসভা ভোটে বনগাঁ আসনে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হন। বিধানসভা ভোটে বিজেপি বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৬টিতে জয়ী হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই এ বার লোকসভা ভোটে ঘুরে দাঁড়াতে তৃণমূল নেতৃত্ব মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বিশ্বজিৎ বলেন, “বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েতে লাগাতার এই জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে।”
তৃণমূলের কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, “একশো দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার টাকা তৃণমূল নেতারা চুরি করেছেন। সেই চোরেরা অপরাধ ঢাকতে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে নতুন নাটক শুরু করেছে। ২৪-এর লোকসভা ভোটের আগেই সিএএ কার্যকর হয়ে যাবে। লোকসভা ভোটে বনগাঁয় তৃণমূলের ভরাডুবি সময়ের অপেক্ষা।”