মমতা, অভিষেকের ছবি সম্বলিত চাঁদার রসিদ (বাঁ দিকে), তোলাবাজির শিকার উৎপল বারিক (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে দোকান বিক্রি করেছিলেন। আর সেই কারণে চাঁদা বাবদ তৃণমূলকে দিতে হয়েছে সাত হাজার টাকা। বিল বইয়ে তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাপিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে টাকা। এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকে।
নামখানার শিবরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা উৎপল বারিক। স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ। তাই নিজের শেষ সম্বল দোকানটি বিক্রি করে দিয়ে সেই টাকায় স্ত্রীকে সুস্থ করার কথা ভেবেছিলেন উৎপল। কিন্তু দোকান বিক্রি করায় তাঁকে শাসকদল তৃণমূলকে দিতে হয়েছে সাত হাজার টাকা। অভিযোগ, রাধানগর গ্রামের ২৩১নম্বর বুথের তৃণমূল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত পড়ুয়া এবং এক পঞ্চায়েত সদস্যের ভাই পঞ্চানন পড়ুয়া সাত হাজার টাকার বিল কাটেন। বলা হয়, দোকান বিক্রি করায় তাঁকে দলীয় তহবিলে টাকা দিতেই হবে। এ প্রসঙ্গে উৎপল বলেন, ‘‘আমি ঋণগ্রস্ত, আমার স্ত্রী অসুস্থ। এই অবস্থায় আমাকে যদি জায়গা বিক্রি করার পর সাত হাজার টাকা দিতে হয় তাহলে তো খুবই মুশকিল। তাও আবার রসিদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি! এ ক্ষেত্রে আমার কী ধারনা হবে? এটা থেকে ভবিষ্যতে যে কী চলতে পারে তা আন্দাজ করতে পারছি।’’ উৎপলের দাবি, তাঁর দোকানটি ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তাঁকে সে জন্য তোলা দিতে হয় সাত হাজার টাকা।
ঘটনা জানাজানি হতেই তোলপাড় পড়ে যায়। স্থানীয় মানুষও তোলাবাজির বিরোধিতা করতে থাকেন। চাপের মুখে দুই নেতাকে শোকজ করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানানো হয়, এ কাজের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্কে নেই। যদিও কী করে এমন কাজ চলতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।