মুদাসসর হোসেনের বক্তৃতার সময় পাশেই বসে আরাবুল ইসলাম। নিজস্ব চিত্র
ইন্ডিয়ান সেকুলায় ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর কর্মী, সমর্থকরা আত্মসমর্পণ না করলে ১০০ দিনের কাজ পাবেন না। কাজ খুঁজতে তাঁদের যেতে হবে ফুরফুরা শরিফে ভাইজানের কাছে। এক সভায় এই ভাষাতেই হুমকি দিলেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা তথা ভাঙড়ের ভোগালি ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান মুদাসসর হোসেন। মুদাসসরের ওই বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কড়া সমালোচনা করেছেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক তথা আব্বাস সিদ্দিকির ভাই নওশাদ সিদ্দিকি।
মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর থানার কাঁটালিয়া এলাকায় তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন মুদাসসর। ছিলেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামও। সেখানেই এই হুঁশিয়ারি দেন মুদাসসর। তখন মঞ্চে ছিলেন আরাবুলও। আরাবুলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত মুদাসসর বলেন, ‘‘যারা খামে (আইএসএফ-এর নির্বাচনী প্রতীক) ভোট দিয়ে জিতিয়েছে, তারা আত্মসমর্পণ করুক। না হলে ফুরফুরায় গিয়ে ১০০ দিনের কাজ করতে হবে। আমরা কাজ, রাস্তাঘাট, সব ধরনের পরিষেবা দেব, আর তোমরা অন্য জায়গায় ঘুরে বেড়াবে— তা আমাদের কর্মীরা মেনে নেবে না।’’ এ নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে অভিযোগ করে কোনও সুফল মিলবে না বলেও দাবি করেছেন মুদাসসর। হুমকির সুরে তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলছে বিডিও-র কাছে যাব। আমি বলছি, বিডিও অফিসের মুখ অবধি যেতে হবে না। কারণ আমরাই সব। বিডিও অফিসের চাতালে গিয়ে মাথা ঠুকেও ভাল হবে না। এক বার যদি আরাবুল সাহেব বলেন, ‘চষে জমিটা মই দিয়ে দাও’, একটা বাঁশি বাজালেই চষে দেব।’’
নিজের মন্তব্যে অনড় মুদাসসর। মঞ্চ থেকে নামতেই তাঁকে এই বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। অনুতাপহীন গলায় মুদাসসরের উত্তর, ‘‘১০০ দিনের কাজ সকলের জন্য। কাউকে নেব না, তা তো বলিনি। তবে আমাদের সহযোগিতা করে চলতে হবে। না করলে কর্মীরা বুঝে নেবে। আবার আমি কী করব?’’
মুদাসসরের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে ভাঙড়ের বিধায়ক তথা নওশাদের তোপ, ‘‘ভাঙড়ে হেরে গিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছেন তৃণমূল নেতারা। এখন সাধারণ আইএসএফ কর্মীদের ভয় দেখিয়ে, মারধর করে তৃণমূলে টেনে নিয়ে যেতে চাইছেন। কিন্তু ভাঙড়ের মানুষ অত্যাচার মেনে নেবে না। রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে এলাকার গরিব মানুষ যাতে ১০০ দিনের কাজের সুযোগ পান বিধায়ক হিসেবে সেটা দেখার দায়িত্বও আমার। কোন দুর্নীতি, ধমক হুঁশিয়ারি এসব চলবে না।’’