তৃণমূলের আহত পঞ্চায়েত সদস্য। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের আবহে ফের রক্তাক্ত বাংলা। জয়নগরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের উপর হামলা চালানোর চালানোর অভিযোগ উঠল। আহত ওই পঞ্চায়েত সদস্যের নাম তপন মণ্ডল। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের বকুলতলা থানা এলাকার গড়দেওয়ানিতে। এই ঘটনায় বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে শাসকদল তৃণমূল।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, এই অঞ্চলে জিততে পারবেন না জেনেই বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে পদ্মশিবির। এই ঘটনায় বকুলতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত নেমেছে পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে এলাকায় একপ্রস্ত ভোটার স্লিপ বিলি করে এসে আবার নতুন করে ভোটার স্লিপ বিলি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তপন। সেই সময়ই চার-পাঁচ জন দুষ্কৃতী এসে তাঁর উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, প্রথমে তপনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাঁর দিকে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। এর পর ধারালো অস্ত্র দিয়েও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতেই আহত পঞ্চায়েত সদস্যকে নিমপীঠ ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জখম অবস্থায় তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন। যদিও বারুইপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বোমাবাজির কথা স্বীকার করা হলেও গুলি চলানোর কথা অস্বীকার করা হয়েছে।
এই ঘটনার সময় তৃণমূলের আক্রান্ত পঞ্চায়েত সদস্য তপনের প্রতিবেশী স্মরজিৎ মণ্ডল কাছেই ছিলেন। তিনিও ভোটার স্লিপ বাছার কাজে সাহায্য করছিলেন। স্মরজিতের কথায়, ‘‘আচমকাই হামলা চালানো হয়। প্রথমে গুলি ছোড়া হয় তপনকে লক্ষ্য করে। তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হতেই বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। ধারালো অস্ত্র দিয়েও হামলা করা হয়। হামলার পর দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। কোনও রকমে একটি দোকানে ঢুকে নিজেকে রক্ষা করেন তপন।’’
এই ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই হাসপাতালে পৌঁছন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। হাসপাতাল চত্বর থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন তাঁরা। গড়দেওয়ানি অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সাহাবুদ্দিন শেখের দাবি, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে। জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডলের আপ্তসহায়ক তথা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য খান জিয়াউল হক বলেন, ‘‘পায়ের তলায় মাটি না থাকাতেই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে। ওরা বুঝতে পেরে গিয়েছে যে জিততে পারবে না। আর সেই কারণেই এই হামলা।’’
অন্য দিকে, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ও জেলার নেতা সুনীপ দাস বলেন “এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।”