গুলিতে যুবকের মৃত্যু, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

এই ঘটনায় তৃণমূলের এক নেতা-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফলে গোটা ঘটনা শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৬
Share:

নাজিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্যানিং থানায় একাধিক খুন, ছিনতাই-সহ অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রতীকী ছবি।

দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিংয়ের খেজুরতলা মোড়ের কাছে।

Advertisement

এই ঘটনায় তৃণমূলের এক নেতা-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফলে গোটা ঘটনা শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম নাজিরুদ্দিন সর্দার ওরফে কালো (২৮)। বাড়ি ক্যানিংয়ের হাটপুকুরিয়ার তেঁতুলবেড়িয়া এলাকায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসেবেই পরিচিত ছিল নাজির। বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে দেখা যেত তাকে।

Advertisement

নাজিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্যানিং থানায় একাধিক খুন, ছিনতাই-সহ অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ২০১৪ সালে ঢোসাহাটে মনিরুল সর্দার খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিল সে। ওই ঘটনায় কিছু দিন জেলও খাটে। পরে জামিনে মুক্তি পায় নাজিরুদ্দিন। ২০০৮ সালে ক্যানিংয়ের ভলেয়ায় একটি খুনের ঘটনাতেও নাম জড়ায় ওই যুবকের।

রবিবার রাতে কলকাতার মেটিয়াব্রুজ থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিল সে। বেতবেড়িয়া স্টেশনে নেমে একটি বাইকে দু’জনের সঙ্গে বাড়ির পথ ধরে। মাঝখানে বসেছিল সে। পেছনে বসেছিল তার দাদা সাহাবুদ্দিন সর্দার। অভিযোগ, ৭-৮ জন দুষ্কৃতী পিছন থেকে ধাওয়া করে খেজুরতলা মোড়ের কাছে ধরে ফেলে তাদের। বাইক থেকে ফেলে মারধর শুরু করে। নাজিরুদ্দিন পালাতে গেলে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। একটি গুলি তার ডান পায়ে লাগে। মাটিতে পড়ে গেলে আরও দু’টি গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। একটি গুলি পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকেরা নাজিরুদ্দিনকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।

রাতেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আসেন ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি পরেশরাম দাস। নাজিরুদ্দিন তাদের দলের কর্মী ছিল বলে অবশ্য মানতে চাননি তিনি। তা হলে হাসপাতালে এলেন কেন? এর জবাবে পরেশ বলেন, ‘‘যে কোনও খুনই দুঃখজনক ঘটনা। তাই এসেছি। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।’’

সাহাবুদ্দিনের কথায়, ‘‘আমরা তৃণমূল করি। কিন্তু আমাদের কোনও শত্রু ছিল না। কেন ভাইকে খুন করা হল, পুলিশ তা তদন্ত করে দেখুক।’’ নাজিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক খুনের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাহাবুদ্দিনের জবাব, ‘‘কেউ কারও নামে মিথ্যা অভিযোগ করতেই পারে।’’ তৃণমূলের ঘাটপুকুরিয়া অঞ্চল সভাপতি সিরাজ ঘরামি-সহ কয়েক জনের নামে পরে খুনের অভিযোগ করেন সাহাবুদ্দিন।

ক্যানিং ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শৈবাল লাহিড়ি বক্তব্য, ‘‘‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের কে বা কারা ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক।’’

পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে যে ছেলেটি খুন হয়েছে, পুলিশের খাতায় তার বিরুদ্ধে একাধিক খুনের অভিযোগ আছে। পুলিশ তাকে দীর্ঘ দিন ধরে খুঁজছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement