জমি দখলের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

সোমবার জমি দখল করতে গেলে গোলমাল বাধে। এলাকার বাসিন্দারা অশোককে আটকে রাখেন। তাঁর স্ত্রী সবিতাকেও আটকে রাখা হয়। সবিতা গোবরডাঙা পুরসভার কাউন্সিলর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০২:১০
Share:

জখম অসিত পাল ও অভিযুক্ত অশোক দাস—ছবি: সুজিত দুয়ারি

জমির দখলকে কেন্দ্র করে সোম ও মঙ্গলবার ধুন্ধুমার বাধল গাইঘাটার ইছাপুর পূর্বপাড়ায়। অভিযোগ, অশোক দাস নামে এক তৃণমূল নেতা স্থানীয় চাষি অসিত পালকে উৎখাত করার জন্য জমির ফসল নষ্ট করে দেন। মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

সোমবার জমি দখল করতে গেলে গোলমাল বাধে। এলাকার বাসিন্দারা অশোককে আটকে রাখেন। তাঁর স্ত্রী সবিতাকেও আটকে রাখা হয়। সবিতা গোবরডাঙা পুরসভার কাউন্সিলর। পুলিশ এসে অশোককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। অভিযুক্ত নেতাদের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার তিন ঘণ্টা রাস্তা আটকে আন্দোলন করেন এলাকার বাসিন্দারা।

ইছাপুর পূর্বপাড়ার যে জমিটি নিয়ে গোলমাল, তার পরিমাণ প্রায় দু’বিঘা। মালিক বাংলাদেশের বাসিন্দা হিরন্ময় দত্ত অনেক দিন আগে মারা গিয়েছেন বলে দাবি অসিতের। তিনি বলেন, ‘‘মালিকের অনুমতি নিয়ে আমি ৪০ বছর ধরে ওই জমি চাষ করছি। কিছু দিন আগে তৃণমূল নেতা অশোক দাস এসে দাবি করেন, ওই জমি তিনি মালিকের কাছ থেকে কিনেছেন। অথচ আমরা জানি, জমির মালিক অনেক আগেই মারা গিয়েছেন।’’

Advertisement

ওই জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য অশোক ও তাঁর লোকজন অসিতকে হুমকি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। সোমবার সকালে অশোক লোকজন নিয়ে জমির দখল নিতে যান বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পেঁপে, কলা, পটল, ঢেঁড়স গাছ কেটে, উপড়ে ফেলা হয়। বাধা দিতে গেলে অসিত ও তাঁর ছেলে রাজুকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।

কিছুক্ষণের মধ্যে সবিতাও ঘটনাস্থলে আসেন। ততক্ষণে এলাকার বাসিন্দারা অশোককে আটকে রেখেছেন। সবিতার অভিযোগ, ‘‘আমাকে হেনস্থা করা হয়। আমার স্বামীকেও ওরা মারধরের চেষ্টা করেছিল।’’ তবে অসিতকে মারধর ও ফসল নষ্ট করার অভিযোগ অস্বীকার করেন সবিতা এবং তাঁর স্বামী।

অসিত বর্তমানে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মঙ্গলবার ইছাপুরের বাসিন্দারা একজোট হয়ে বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ ইছাপুর হাটখোলা রাজ্য সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করেন। যানজটে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বেলা দেড়টা নাগাদ গাইঘাটা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

যদিও অশোককে গ্রেফতার করা হল না কেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের দাবি, অশোককে থানায় এনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার বিকেল পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। পরে রাতে অভিযোগ হয়। পুলিশ তদন্ত করছে। তাঁকে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন সবিতাও।

গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘অসিতের নিজস্ব জমি না হলেও দীর্ঘ দিন ধরে তিনি চাষবাস করছেন। ভোগ দখলের অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা যায় না। অশোকের কাজকে আমরা সমর্থন করি না।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও জানিয়েছেন, পুলিশকে আইন মেনে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। অশোক বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগে হিরন্ময় দত্তর কাছ থেকে আমরা জমিটা কিনেছি। অসিতের সঙ্গে আলোচনাও করেছিলাম। সে কিছু টাকা দাবি করেছিল। তারপরেও জমি ছাড়েনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement