আনন্দে: বারাসত জেলাশাসকের দফতরে তৃণমূলের লোকজন। ছবি: সুদীপ ঘোষ
শিল্পাঞ্চলে একে একে হাতছাড়া হওয়া পুরসভা ফের বিজেপির কাছ থেকে পুনর্দখল নিচ্ছে তৃণমূল। হালিশহর, কাঁচরাপাড়া, গারুলিয়ার পরে এ বার নৈহাটি পুরসভায় ক্ষমতায় ফিরল ঘাসফুল শিবির।
বুধবার নৈহাটির পুরপ্রধানকে অপসারণ নিয়ে বৈঠক ছিল বারাসত জেলাশাসকের দফতরে। সেখানে বিজেপির কাউন্সিলরেরা আসেননি। ফলে পদে থেকে গেলেন পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়।
লোকসভা ভোটের পরে ৩১ আসনের পুরসভার বেশির ভাগ কাউন্সিলরকে দলে টেনে ক্ষমতার দখল নেয় বিজেপি। কিন্তু এ দিন ২৪-০ ভোটে জয়ী হয়েছেন অশোক। মঙ্গলবার পর্যন্ত বিজেপির হাতে ছিল আট জন কাউন্সিলর। তাঁদের মধ্যে এক মহিলা কাউন্সিলর এ দিন তৃণমূলের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। বাকি সাত জন ছিলেন গরহাজির।
হাইকোর্টের নির্দেশে এ দিন বারাসতে জেলাশাসকের অফিসে ভোটাভুটি হয়। এর আগে বনগাঁর পুরপ্রধান অপসারণের বৈঠকও হাইকোর্টের নির্দেশে জেলাশাসকের অফিসে হয়েছিল। সেই ভোটেও বিজেপি গরহাজির থাকায় পুরপ্রধান পদ তৃণমূলই দখলে রেখেছিল।
কেন এলেন না বিজেপি কাউন্সিলরেরা?
দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এটা তাদের কৌশল। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘আর পাঁচ মাস পরে পুরভোট। ফলে তৃণমূলের পুরনোদের বয়ে বেড়ানোর থেকে আমরা নতুন প্রার্থী দিয়ে ভোটে লড়াকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’’
নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের কাউন্সিলরদের ভয় দেখিয়ে বিজেপি দলে টেনেছিল। ভয় কাটতেই তাঁরা ফিরে এসেছেন। যে সাত জন বিজেপিতে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে চার জন আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।’’
একের পর এক পুরসভা দখল হওয়ায় নৈহাটিতে প্রশাসক বসিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যায় বিজেপি। সেই মামলার হাইকোর্ট রায় দেয়, প্রশাসক বসানো বেআইনি। পুরপ্রধানকে ভোটাভুটির মুখোমুখি হতে হবে।
শিল্পাঞ্চলের যে সব পুরসভায় লোকসভা ভোটের পর থেকে জাঁকিয়ে বসেছিল বিজেপি, ক্রমশ সবগুলি থেকেই তাদের প্রভাব কমছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ভাটপাড়া। এখানে কাউন্সিলরদের ভোটাভুটিতে পুরপ্রধানের পদ পান অর্জুনের ভাইপো, বিজেপির সৌরভ সিংহ। এই পরিস্থিতিতে সেখানে আগামী ছ’মাস ভোটাভুটি করা যাবে না।