সিপিএমের এই পার্টি অফিসে এখন গোয়াল। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের পার্টি অফিস এখন গোয়াল। এক সময়ের বাম দুর্গ উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের সেই খবর সোমবার প্রকাশ্যে এনেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তার পরেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং সিপিএমের মধ্যে চাপানউতর।
সিপিএমের অভিযোগ, রাজ্যের বর্তমান শাসকদল তৃণমূলের অত্যাচারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ওই পার্টি অফিস। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতার শীর্ষে থেকে অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে অসম্মান করার কারণেই আজ শাসনে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘তৃণমূল যে ভাবে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে, যে বর্বরোচিত কাজ করে যাচ্ছে তাতে মানুষ কোনও দিন তাদের ক্ষমা করবেন না।’’
ঘটনাচক্রে এক সময়ে এই শাসন এলাকায় দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা ছিলেন মজিদ আলি ওরফে মজিদ মাস্টার। এলাকার রাজনীতিতে সেই সময়ে ক্রমশ ‘মিথ’ হয়ে ওঠা মজিদকে নিয়ে তৎকালীন বিরোধী তথা বর্তমান শাসকদল তৃণমূল বিপুল অভিযোগও করেছিল। এখন ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে যাওয়া সেই মজিদের সঙ্গে মঙ্গলবার বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে। তবে শাসনে এক সময় জমজমাট থাকা সিপিএমের পার্টি অফিসে অধুনা গোয়াল তৈরি হওয়া নিয়ে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ২০১১ সালে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলের পর গোটা রাজ্যের সমীকরণই বদলে গিয়েছে। সেই মাফিক বদলে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার চিত্রও। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই পার্টি অফিসটি যে এলাকায় সেই শাসন পঞ্চায়েতের ২২টি আসনের একটিও সিপিএমের দখলে নেই। বারাসত দুই নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে রয়েছে মোট ১৫টি আসন। সেখানেও কোথাও অস্তিত্ব নেই বামেদের। এমনকি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের ৫২টি আসনের কোথাও নেই বামেরা। যদিও বামেদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের সময় ওই এলাকায় ভয় দেখিয়ে প্রার্থী দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তার জেরেই তৃণমূল সব আসনে ‘ওয়াকওভার’ পেয়েছে বলে দাবি বামেদের।
পার্টি অফিসের ভিতর এখন খড় এবং গোবরের স্তূপ। নিজস্ব চিত্র।
যদিও তৃণমূল বামেদের তোলা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের বারাসত সংসদীয় জেলার সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষের উপরে অত্যাচারের ফল হল আজকের এই গোয়াল ঘর। যখন বামেরা ক্ষমতায় ছিল তখন তারা অত্যাচার চালিয়েছে বলেই মানুষ তাদের আজও ক্ষমা করেনি। আজ ওদের পার্টি অফিসে আসার লোক নেই। তাই নেতার বদলে গরু ঢুকে পড়েছে পার্টি অফিসে।’’