ঠাকুরনগরের হাসপাতালেও সংঘর্ষ হয় তৃণমূল এবং বিজেপির। সেখানে কয়েক জনকে আটক করে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
ঠাকুরবাড়ির মাঠে শুরু হওয়া সংঘাতের রেশ গড়াল হাসপাতালে। শুধু তাই নয়, জখমদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সেখানেও হাতাহাতিতে জড়ালেন তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। এমনকি, তাঁকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়াও। তাঁরা অভিযোগ করেছেন পুলিশের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে মারামারির সময় বেশ কয়েক জনকে আটক করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হন। সব মিলিয়ে সকাল থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক উত্তেজনা সন্ধ্যাতেও বহাল মতুয়া অধ্যুষিত ঠাকুরনগরে।
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেখানে তিনি পৌঁছনোর আগে থেকেই তীব্র হচ্ছিল রাজনৈতিক চাপান-উতোর। অভিষেককে মতুয়াদের ঠাকুরঘরে আসতেই দেবেন না বলে স্লোগান দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের নেতা শান্তনু ঠাকুর। তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে এই ঝামেলার মধ্যে আর মতুয়াদের ঠাকুরঘরে পুজো দেওয়া হয়নি অভিষেকের। তিনি শান্তনু তথা বিজেপির বিরুদ্ধে খাতোপ দেগে ফিরে যান। অন্য দিকে, ওই সময়টা ঠাকুরঘরের দরজা বন্ধ করে ভিতরে বসেছিলেন শান্তনু।
অভিষেক ঠাকুরনগর ছাড়ার পরই তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষ শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজনের মারে তাদের বেশ কয়েক জন আহত হন। তৃণমূলও হামলার অভিযোগ করেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আহতদের আলাদা আলাদা ভাবে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের রাজনৈতিক সতীর্থরা। কিন্তু সেখানেও আবার একপ্রস্ত সঙ্ঘাতে জড়ান তাঁরা। অশোকের অভিযোগ, অভিষেকের অনুগামীরা তাঁকেও মারধর করেছেন। তিনি আহতদের নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর গায়ে হাত তোলেন তৃণমূলের লোকজন। পরনের পাঞ্জাবী ছিঁড়ে দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমের সামনে অশোককে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার শরীরের কোথায় মারেনি বলুন! গণপিটুনি বোঝেন?’’ আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান বনগাঁর সাংসদ শান্তনুও। ‘‘পশ্চিমবাংলার আজকের রাজনীতি, সংস্কৃতি, গণতন্ত্র— সমস্ত কিছু শেষ। আমি এত দিন কিছু বলিনি। আজ অভিষেক যেটা পুলিশকে দিয়ে করাল (গন্ডগোল), সেটা সম্পূর্ণ ভাবে একতরফা ঘটনা।’’
অন্য দিকে, তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর হাসপাতালে যান। তাঁদের দলের লোকজনকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। সব মিলিয়ে ঠাকুরনগরে উত্তেজনা চরমে।