প্রতীকী ছবি।
সর্পদষ্ট শিশুকে নিয়ে যাওয়া হল ওঝার কাছে। পরে যখন হাসপাতালে আনা হয় তিন বছরের শিশুটিকে, তখন আর প্রাণে বাঁচানো যায়নি।
বাসন্তীর জ্যোতিষপুর পঞ্চায়েতের রানিগড় গ্রামে বাড়ি ঋতু বর্মণ নামে শিশুটির। বৃহস্পতিবার ভোরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আনা হয় তাকে। চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ খাওয়া-দাওয়া করে বাবা-মায়ের ঘুমিয়েছিল মেয়েটি। রাতে হঠাৎকেঁদে ওঠে। বাবা জয়দেব দেখেন, বিছানায় একটি কালাচ সাপ।সাপটিকে মেরে ফেলেন সকলে। মেয়েকে রাত দেড়টা নাগাদ স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যান জয়দেব। সেখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে ঝাড়ফুঁক, তুকতাক। পরে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা এভিএস দেন। শিশুটিকে পাঠানো হয় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে আসার পথেই মারা যায় ঋতু।
চিকিৎসকদের দাবি, সাপে কাটার পরে তড়িঘড়ি হাসপাতালে আনলে হয় তো প্রাণে বাঁচানো যেত। ওঝা, গুনিনের কাছে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট করা হয়েছিল।
সাপে কাটা রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘শিশুটির বয়স মাত্র তিন। ওজন ১০ কেজিরও কম। সাপটিকে দেখে মনে হয়েছে, পূর্ণবয়স্ক কালাচ। সাধারণত, একটি কালাচের ১ মিলিগ্রাম বিষেই একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মৃত্যু হতে পারে। সেখানে এত ছোট শিশুর পক্ষে এই কামড় খুবই মারাত্মক। সাপে কামড়ানোর পরে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে আনলে হয় তোবাঁচানো যেত।’’
জয়দেব বলেন, ‘‘অত রাতে কোথায় যাব বুঝে উঠতে পারিনি। তাই প্রতিবেশী এক ওঝার কাছে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলাম। হাসপাতালে আনলে হয় তো বেঁচে যেত।”
এ বিষয়ে ক্যানিং যুক্তিবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার সদস্য দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘আমরা লাগাতার প্রচার করছি, মানুষকে সচেতন করছি। সাপে কামড়ালে সোজা হাসপাতালে আসার কথা বলা হচ্ছে। ওঝা-গুনিনের কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করা চলবে না। কিছু মানুষ এ সব শুনছেন না। ফলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।”