ধৃত: অভিযুক্তেরা। নিজস্ব চিত্র
কো অপারেটিভ সোসাইটির আড়ালে চলছিল প্রতারণা। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সোসাইটির তিন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে হাবড়া থানার পুলিশ। অভিযোগ, চক্রের সদস্যেরা ব্যক্তিগত ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা আত্মসাৎ করত ওই সোসাইটি। হাবড়া শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় একটি বহুতল বাড়ির চারতলার ঘর ভাড়া নিয়ে সোসাইটির অফিস খোলা হয়েছিল। পুলিশ সেটি বন্ধ করে দিয়েছে।
কী ভাবে চক্রের হদিস পেল পুলিশ? তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ১০ মে দু’টি ফোন নম্বর থেকে বারাসতের নোয়াপাড়া কাঠগোলা এলাকার বাসিন্দা সাগর দেবের কাছে এক ব্যক্তি ফোন করে। নিজের নাম বলে, সুমন বিশ্বাস। পরিচয় দেয়, একটি ঋণদানকারী সংস্থার পদস্থ আধিকারিক হিসাবে। সাগরকে ব্যক্তিগত ঋণ দেওয়ার কথা বলে সুমন। পেশায় কাপড়ের ব্যবসায়ী সাগরের সে সময়ে টাকার প্রয়োজন ছিল। তিনি রাজি হয়ে যান। এক ব্যক্তি সাগরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর আধার কার্ড ও প্যান কার্ডের ফটোকপি নিয়ে আসে। সঙ্গে সাগরের ৩ কপি ছবি ও একটি ক্যানসেলড চেকও নেয়।
সাগরকে পরে জানানো হয়, ঋণ পেতে হলে ৮০ হাজার টাকা জমা করতে হবে ‘সিকিউরিটি মানি’ হিসাবে। টাকাটা ‘রেজ মাল্টি স্টেট ক্রেডিট কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’-এর নামে দেওয়ার কথা বলা হয়। এর বিনিময়ে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলা হয় সাগরকে।
২২ মে সাগর চেক জমা করেন। অভিযোগ, ঋণ পাওয়ার নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও টাকা দেওয়া হচ্ছিল না। তিনি হাবড়ার ওই সোসাইটির অফিসে গেলে তাঁকে আজ নয় কাল বলে ঘোরাতে থাকে কর্মকর্তারা। ৮০ হাজার টাকা ফেরত চেয়েও পাচ্ছিলেন না সাগর। বৃহস্পতিবার হাবড়া থানায় সোসাইটির নামে লিখিত অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ী। পুলিশ সোসাইটির অফিসে হানা দিয়ে তিনজনকে জেরা করে। পরে গ্রেফতার করা হয় সমীর দে, প্রবীর দে ও প্রিয়াঙ্ক পালকে। হাবড়ার আইসি গৌতম মিত্র জানান, আর্থিক লেনদেন করার বৈধ সরকারি নথি ধৃতেরা দেখাতে পারেনি। কাউকে ঋণ দিতে গেলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সেবির অনুমতি প্রয়োজন। তা-ও সোসাইটির কাছে নেই। প্রতারণার জালে আরও কারা ফেঁসেছেন, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। চক্রে মাথাদের খোঁজ চলছে।