—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় যত এগিয়ে আসছে, তত বিরোধী প্রার্থীদের হুমকি, বাড়িতে হামলার অভিয়োগ উঠছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। শনিবার দুই জেলার একাধিক বিজেপি প্রার্থী ওই অভিযোগ তুলেছেন। সামনে আসছে তৃণমূলের বাইক বাহিনীর দাপটের কথাও। কোনও ক্ষেত্রেই তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া ২ ব্লকের ভুরকুণ্ডা পঞ্চায়েতের ২৪ নম্বর বুথে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন অর্চনা অর্চনা সিংহ মুন্ডা। তাঁর বাড়ি অশোকনগরের দৌলতপুরে। শনিবার সকালে তাঁর বাড়িতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।
অর্চনার অভিযোগ, “শনিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ তৃণমূলের বুথ সভাপতি বিপ্লব পাল বাড়িতে চড়াও হন। কেন আমি বিজেপির প্রার্থী হয়েছি, সেই কৈফিয়ত চান। প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য উনি আমাকে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখান। না করলে আমি এলাকায় থাকতে পারব না এবং ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন। এমনকি আমাকে প্রাণনাশেরও হুমকি শুনতে হয়েছে।”
অভিযোগ অস্বীকার করে বিপ্লবের দাবি, ‘‘ওই প্রার্থীর শ্বশুর আমাদের দল করেন। তাঁর সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়েছিল। তাঁকে শুধু বলেছিলাম, তোমার বৌমা বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন, এটা কি দেখতে ভাল লাগে? মিথ্যে রটিয়ে ওরা পালে হাওয়া তোলার চেষ্টা করছে।” হাবড়া ২ ব্লক তৃণমূলে সভাপতি বৃন্দাবন ঘোষ বলেন, “ব্লক সভাপতি হিসাবে নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট বলে দিয়েছি, বিরোধী প্রার্থীদের কুকথা দল বরদাস্ত করবে না। দৌলতপুরের ঘটনাটি দলীয় ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যতদূর জানতে পেরেছি, বুথ সভাপতি এমনটা বলেননি।”
মনোনয় প্রত্যাহারের জন্য হাসনাবাদের বিভিন্ন এলাকায় বাইক বাহিনী নামিয়ে শাসকদল সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে বামেরা। স্থানীয় সিপিএম নেতা শেখ আব্দুল রেজ্জাক মোল্লা বলেন, “হাসনাবাদের বরুণহাট, রামেশ্বরপুর পঞ্চায়েতের ২৭, ২৮, ৩০, ৩৩ নম্বর বুথে বামপ্রার্থীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। বাইক বাহিনী বাড়ির সামনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। কয়েকজন প্রার্থী বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।” এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরির অভিযোগ করেছে বিজেপিও। তাদের দাবি, ন্যাজাটের প্রায় ৩৫ জন বিজেপি প্রার্থী তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে কলকাতায় দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।সন্ত্রাসের অভিযোগ মানেনি তৃণমূল, স্থানীয় তৃণমূল নেতা আমিরুল ইসলাম গাজির দাবি, “রাস্তা দিয়ে কেউ গেলেই বামেরা তাকে তৃণমূলের বাইক বাহিনী বলছে। আসলে সংবাদমাধ্যমে ভেসে থাকতে এই সব অভিযোগ করা হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের কানপুর ধনবেড়িয়া পঞ্চায়েতে হাঁসডোকরা গ্রামের বিজেপি প্রার্থী দীনেশ মণ্ডলের বাড়িতে শনিবার রাতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি নেতা দেবাংশু পন্ডার অভিযোগ, “বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় শাসকদলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে।পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক পান্নালাল হালদার।মন্দিরবাজারের কেচারকুড় পঞ্চায়েতের ধান্যকাটা গ্রামে এক বিজেপি প্রার্থীর আত্মীয়ের উপর হামলার অভিযোগও উঠেছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জয়দেব হালদারের দাবি, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। অপপ্রচার, কুৎসা রটানো হচ্ছে।