কে শোনে কার কথা...।
হেলমেট না পরলে পেট্রোল নয়-
রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে এই নির্দেশ জারির পরে ধীর গতিতে হলেও সজাগ হচ্ছে কলকাতা। কিন্তু এই শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরের ডায়মন্ড হারবারে অবশ্য সেই নির্দেশ শোনার কোনও বালাই নেই।
বিনা হেলমেটে পেট্রোল পাম্পে ঢুকে তেল নিয়ে চলে যাচ্ছেন বেশিরভাগ মোটরবাইক আরোহী। যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘সব পেট্রোল পাম্পের মালিকদের হেলমেট ছাড়া তেল দিতে নিষেধ করা হয়েছে। এই নিয়ে কোনও সমস্যা হলে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
মাথায় হেলমেট না পরার ফলে দুর্ঘটনায় বিপদ বাড়ে অনেকেরই। কিন্তু তা সত্ত্বেও মোটরবাইক আরোহীদের অনেকেরই হেলমেট পরতে অনীহা। মাথা ভারী হয়ে যাওয়া, আশপাশে কিছু দেখতে না পাওয়া, হর্ন শুনতে অসুবিধা— হেলমেট না পরার এমন নানা অজুহাত তোলেন বাইক চালকেরা। কিন্তু পুলিশের পরিসংখ্যানই বলছে, যে ক’টি মোটরবাইক দুর্ঘটনা ঘটে, তার বেশির ভাগই হয় হেলমেট না পরার কারণে।
ডায়মন্ড হারবার মহকুমার ৯টি ব্লকে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২০টি পেট্রোল পাম্প রয়েছে। সেগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি সারা রাত খোলা থাকে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মহকুমার কয়েকটি পেট্রোল পাম্পে ঘুরে দেখা গিয়েছে, হেলমেট ছাড়াই মিলছে পেট্রোল। পাম্পের কর্মীরা তেল দিতে আপত্তি করছেন না। রাজ্য সরকারের নির্দেশিকার বিষয়ে জানেন কিনা, প্রশ্ন করতে পাম্পের অনেক কর্মী ‘না’ বলেছেন। কেউ কেউ দাবি করেছেন, তেল না দিলে গালাগাল করা হচ্ছে। মারধরের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই কেউ হেলমেট না পরে এলেও তেল দিতে বাধ্য হচ্ছেন পাম্প কর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাম্প মালিকদের দাবি, রাজ্য সরকার ঘোষণা করলেও এখনও তাঁদের কাছে এই বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি। তাই সমস্যা হচ্ছে। এক পাম্প মালিক বলেন, ‘‘আমি হেলমেট ছাড়া তেল না দিলেও পাশের পাম্প দিয়ে দেবে। ফলে আমার ব্যবসায় ক্ষতি হবে। এ ছাড়াও, রয়েছে তেল না দিলে মারধরের হুমকি।’’ ডায়মন্ড হারবার শহরের একটি পেট্রোল পাম্পের মালিক তপন চক্রবর্তীর ক্ষোভ, হেলমেট ছাড়া তেল দেব না বললেই গালাগাল করা হচ্ছে। লিখিত নির্দেশ দেখতে চাইছে। কর্মীরা ভয় পেয়ে তেল দিয়ে দিচ্ছেন।
বাইক চালক অমর রায়, জামাল শেখদের সাফাই, ‘‘হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া হবে না, এটা প্রথম শুনলাম। এ বার হেলমেট কেনার সময়টুকু তো দিতে হবে!’’