তৎপর: জয়নগর ১ ব্লকে কন্টেনমেন্ট জ়োনে ঘেরা হচ্ছে এলাকা। ছবি: সুমন সাহা
সরকারি নির্দেশ মতো বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করে লকডাউন জারি হয়েছে। বিকেলের পর বহু জায়গাতেই এ দিন পুলিশ তৎপরতা চোখে পড়েছে। তবে কিছু জায়গা কন্টেনমেন্টের আওতায় থাকা সত্ত্বেও তেমন কড়াকড়ি ছিল না।
দু’দিন আগে জেলা প্রশাসনের তরফে ব্লক ও পুরসভা ভিত্তিক কন্টেনমেন্ট ও বাফার জ়োনের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক ভাবে ওই তালিকা অনুযায়ীই লকডাউন জারি হওয়ার কথা বলা হয়। তবে পরে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে সেই তালিকা সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল গড়িয়ে সেই সংশোধিত তালিকা সরকারের এগিয়ে বাংলা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। ফলে এ দিন দিনভর কোন এলাকা লকডাউনের আওতায় রয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় ১২৫টি এলাকাকে চিহ্নিত করে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। যে সমস্ত এলাকাগুলিকে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে, সেই সমস্ত এলাকায় অকারণে ভিড়, জমায়েত করা যাবে না। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে সাধারণ মানুষকে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের দোকান, মাছ, আনাজ বাজার খোলা থাকবে। অধিকাংশ দোকান, হোটেল, রেস্তরাঁ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছোট ছোট গণপরিবহণ ব্যবস্থার মধ্যে অটো, টোটো, রিকশা, ভ্যানো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ডেভলপমেন্ট) সাগর চক্রবর্তী বলেন, সরকারি নির্দেশ মেনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আপাতত সাত দিনের জন্য বেশ কিছু এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে বিডিওদের বলা হয়েছে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। ঘোষিত কনটেনমেন্ট জ়োনগুলিতে এ দিন পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে। এলাকায় মাইকে প্রচার চলে। ক্যানিং ১ ব্লকের বেশ কয়েকটি এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে। এই সমস্ত এলাকায় ক্যানিং থানা ও ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে মাইকে প্রচার হয়। আগামী সাত দিন এই সমস্ত এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট ও জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্যানিং বাজার এলাকাতেও এ দিন মাইকে প্রচার হয়েছে প্রশাসনের তরফে। শারীরিক দূরত্বের বিধিনিষেধ মেনে ও মাস্ক পরে যাতে মানুষজন বাজারে প্রবেশ করেন, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তৎপরতা শুরু হয়েছে ভাঙড় ১ ব্লক দফতরের তরফেও। জয়নগরের দক্ষিণ বারাসত পঞ্চায়েতের কয়েকটি এলাকা কন্টেনমেন্ট করা হয়েছে। এ দিন বিকেলে পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন সেই সব এলাকা পরিদর্শন করেন। বাঁশের ব্যারিকেড করে এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়। মাইকে সাধারণ মানুষকে লকডাউন মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে অনেক জায়গাতেই এ দিন বিকেলের পরেও তেমন সচেতনতা চোখে পড়েনি। ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমার বহু এলাকা কন্টেনমেন্ট করা হয়েছে। তবে এ দিন দুই মহকুমার অনেক জায়গাতেই সে ভাবে সচেতনতা চোখে পড়েনি। ছিল না প্রশাসনের নজরদারিও।