এক ঘর ছেলেমেয়ে বসেছে টেবিল-চেয়ারে। সামনে খাতা পেন। এঁদের মধ্যে কেউ সবে স্নাতক উত্তীর্ণ। কেউ আবার উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। তাঁদের পড়াচ্ছেন পুলিশ কর্তারা।
রবিবার বসিরহাটের রবীন্দ্র ভবনের কাছে সাঁইপালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির প্রস্তুতির পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দিল পুলিশ কর্তারা। গত ১ নভেম্বর ‘কেরিয়র গাইড’ নামে এই চাকরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর। পুলিশের ঊর্ধ্বতনেরা চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ছেলেমেয়েদের পড়াবেন। আর তাঁদের সামনে বসে পড়া মুখস্থ করবেন ছাত্রছাত্রীরা।
শুধু পুলিশ কর্তারা নন। প্রয়োজনে পড়াবেন স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরাও। সি সুধাকর বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের সুবিধার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে চাকরি পেতে তাঁদের কোনও অসুবিধা না হয়।’’ সবাই এই সুবিধা পাবেন বলে জানান তিনি। তার জন্য মাসে টাকাও ধার্য করা হয়েছে। তবে দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে পুলিশ সাহায্য করবে বলে তিনি জানান।
এ দিন বসিরহাটে প্রথম ক্লাস নেওয়া হয়। পুলিশ সুপার ছাড়া উপস্থিত ছিলেন এসডিপিও আশিস মৌর্য, আইসি বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখর পালিত, শিক্ষক পল্লব মণ্ডল, কাউন্সিলর অসিত মজুমদার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কেন্দ্রে চাকরি সংক্রান্ত বই এবং কম্পিউটার আনা হয়েছে যা পড়ুয়াদের সাহায্য করবে। সপ্তাহে দু’দিন ক্লাস হবে। পুলিশকর্তারা মনে করেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে প্রথমে জরুরি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া। তাই এই উদ্যোগ।
এ দিনের ক্লাসে বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪৫ জন ছাত্রছাত্রী যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে বসিরহাটের নিশাদ ইসলাম, হাড়োয়ার গোপালপুরের বাসিন্দা দীপ সাহা এবং হাসনাবাদে বাড়ি আলমগির খানের কথায়, ‘‘চাকরির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে পুলিশ যথেষ্ট ভাল কাজ করেছেন। আমরা উপকৃত হলাম।’’ পুলিশের পক্ষে জানানো হয়েছে, এই কেন্দ্রে যোগ দিতে হলে থানা থেকে ফর্ম নিয়ে তা পূরণ করে জমা দিতে হবে। ক্লাসঘরে বসে সমস্ত রকম বই পড়ার পাশাপাশি আধুনিক বিশ্বকে জানতে কম্পিউটারের সুবিধা নিতে পারবেন ছেলেমেয়েরা।