বেহাল রাস্তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। সোমবার, ইছাপুরে। ছবি: মাসুম আখতার
ব্যারাকপুর থেকে কাঁচরাপাড়া যাওয়ার অন্যতম রাস্তা এটি। অন্তত ছ’টি পুরসভা এলাকার বাসিন্দারা এই রাস্তার উপরেই নির্ভরশীল। লোকাল ট্রেন ঠিক মতো চলছে না বলে ঘোষপাড়া রোডের উপরে চাপ বেড়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার অবস্থা এতটাই বেহাল যে, তা যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ধুলোর চোটে দুর্ভোগ বাড়ছে বাসিন্দাদের। অভিযোগ, সমস্যার সমাধানের জন্য বার বার আবেদন করেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত, সোমবার সকালে ইছাপুরে ওই রাস্তা অবরোধ করেন এলাকার বাসিন্দারা। অবশ্য পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে সমস্যার মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা।
পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানান, রাস্তাটির স্থায়ী মেরামতির জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাব উপর মহলে পাঠানো হয়েছে। মেরামতির জন্য ২ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। কিন্তু এখন কাজ শুরুর সবুজ সঙ্কেত আসেনি।
এ দিন সকালে এলাকার মহিলা ও পুরুষেরা একজোট হয়ে ইছাপুর চৌমাথায় বসে পড়েন। রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দড়ি বেঁধে দেন। এর জেরে দিনের ব্যস্ত সময়ে ওই রাস্তায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। বিপাকে পড়া নিত্যযাত্রীরা অনুরোধ করা সত্ত্বেও অবরোধ তোলা হয়নি। পুলিশ অবরোধ তুলতে অনুরোধ করলেও এলাকার বাসিন্দারা সাফ জানিয়ে দেন, রাস্তা মেরামতি নিয়ে যত ক্ষণ না কোনও আশ্বাস মিলছে, তত ক্ষণ তাঁরা উঠবেন না। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ সেখানে পৌঁছলে বাসিন্দারা তাঁর কাছে রাস্তা মেরামতির বিষয়ে জানতে চান। তিনি আশ্বাস দেন, দ্রুত রাস্তার কাজ শুরু হবে। এর ঘণ্টাখানেক পরে অবরোধ ওঠে।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দেখে বোঝার উপায় নেই, যে ঘোষপাড়া রোডে এক সময়ে পিচ ছিল, সেটির এখন ভেঙে যাওয়া মোরাম রাস্তার থেকেও খারাপ অবস্থা। তাঁরা জানান, এই রাস্তা শিল্পাঞ্চলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি একমাত্র রাস্তাও বলা যায়। ব্যারাকপুর থেকে কাঁচরাপাড়া যাওয়ার বিকল্প রাস্তা কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। কিন্তু, সে রাস্তা দিয়ে বাস, অটো বা গণ-পরিবহণের কোনও সুবিধা মেলে না। ওই রাস্তাটি লোকালয়ের মধ্যেও নয়। ফলে যাতায়াত থেকে পণ্য পরিবহণ, ভরসা সেই ঘোষপাড়া রোডই, দাবি বাসিন্দাদের।
এলাকার বাসিন্দা সমরেশ সরকার বলেন, “রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হাঁটাও কঠিন। আগে হলে রাস্তা মেরামতি করা যেত। এখন রাস্তাই তো নেই, মেরামতিটা কিসের হবে? বর্ষার পর থেকে ভাঙা রাস্তা থেকে সমানে ধুলো উড়ছে। তার ফলে বাড়িঘর, দোকানপাট সব ধুলোয় ভরে যাচ্ছে। কাজ শুরু না হলে রাস্তায় নামা ছাড়া আমাদের কোনও পথ নেই।”