বিপত্তি: ভোরের দিকে ভেঙে পড়ে এই ডালটি। পথে লোকজন কম থাকায় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। ছবি: সুজিত দুয়ারি
আবারও বিপত্তি!
ভেঙে পড়ল যশোর রোডের পাশে থাকা প্রাচীন গাছের মোটা কাঁচা ডাল। অল্পের জন্য এড়ানো গিয়েছে দুর্ঘটনা।
শুক্রবার ভোর ৫টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে অশোকনগরের মহাপ্রভু কলোনি এলাকায় যশোর রোডে। ডালটি রাস্তায় পড়ে যান চলাচল থমকে গিয়েছিল। চালকেরাই ডাল সরিয়ে পাশে রেখে দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ডালটি ভেঙে পড়ার ঠিক আগেই ওই এলাকা দিয়ে গাড়ি গিয়েছে। তবে ভোরের দিকে রাস্তায় যানবাহন কম থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেনি। দিনের ব্যস্ত সময়ে ডাল ভাঙলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
যশোর রোডের পাশে থাকা গাছের শুকনো মরা ডাল কেবল অশোকনগরের মানুষের বিপদের কারণ নয়। বারাসত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার পথে এমন শুকনো, মরা ডাল বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে আছে। তবে কাঁচা ডাল ভাঙার ঘটনা কমই ঘটে। অনেক সময়ে কিছু ডাল বাইরে থেকে দেখতে কাঁচা হলেও ভিতরে ভিতরে ক্ষয় হয়ে আসে। এমন একটি ডাল ভেঙে পড়ে ক’দিন আগেই মারা যান গাইঘাটার চাঁদপাড়ার দুই বাসিন্দা।
ওই ঘটনার পরে বিপজ্জনক ডাল কাটার দাবি আরও জোরদার হয়েছে। জেলাশাসকের নির্দেশে ইতিমধ্যে বিপজ্জনক ডাল চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তারই মধ্যে ফের ঘটল বিপত্তি।
অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী এ দিন বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ মারা যাচ্ছেন। আমি আগেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, জেলাশাসকের কাছে বিপজ্জনক ডাল, মৃত ও মৃতপ্রায় গাছ কাটার দাবি জানিয়েছি। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বিপজ্জনক ডালগুলি চিহ্নিত করে দ্রুত কেটে ফেলতে হবে।’’
জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘‘যশোর রোডের দু’পাশে থাকা গাছগুলির যে সব বিপজ্জনক ডাল সড়কের উপরে চলে এসেছে, তা কাটার কথা বলা হয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে। আবারও কথা বলছি।’’
এ দিকে, শুক্রবার দুপুরে গাইঘাটার চাঁদপাড়া এলাকায় বিপজ্জনক ডাল শনাক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। ওই দলে ছিলেন, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, বন দফতর, দমকল, বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি লিমিটেড, পুলিশের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া, ছিলেন গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস এবং বিডিও সঞ্জয় সেনাপতি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বনগাঁ মহকুমার সহকারী বাস্তুকার স্নেহাশিস সিকদার বলেন, ‘‘মরা, শুকনো ডালের পাশাপাশি বিপজ্জনক ডালও শনাক্তকরণ করা হচ্ছে। পেট্রাপোল থেকে গাইঘাটার কুলপুকুর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার পথে বিপজ্জনক ডাল কাটা হবে। শনিবার থেকে ডাল কাটার কাজ শুরু হবে গাইঘাটা এলাকায়।’’
যশোর রোডের বাকি অংশের বিষয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, রাস্তার উপরে থাকা বিপজ্জনক ডাল শনাক্তকরণের কাজ শুরু হচ্ছে। শীঘ্রই ডাল কাটার বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।