টুকলি নিয়ে উত্তেজনা অশোকনগরে

পরীক্ষা চলাকালীন স্কুলের ঘরে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের কাছে টুকলি আছে কিনা দেখছিলেন রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় বোর্ড নিযুক্ত দুই শিক্ষক-শিক্ষিকা। অভিযোগ, ছাত্রীদের কাছে টুকলি আছে কিনা তা দেখতে গিয়ে অশালীন আচরণ করেছেন ওই শিক্ষক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অশোকনগর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৮ ০২:৩৪
Share:

ভাঙচুর: পরিদর্শকদের গাড়িতে। ছবি: সুজিত দুয়ারি

পরীক্ষা চলাকালীন স্কুলের ঘরে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের কাছে টুকলি আছে কিনা দেখছিলেন রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় বোর্ড নিযুক্ত দুই শিক্ষক-শিক্ষিকা। অভিযোগ, ছাত্রীদের কাছে টুকলি আছে কিনা তা দেখতে গিয়ে অশালীন আচরণ করেছেন ওই শিক্ষক। টুকলি করার অভিযোগে ৮ জনকে বহিষ্কারও (এক্সপেল) করেন তাঁরা।

Advertisement

গোটা ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে অশোকনগরের বিড়া বল্লভপাড়া হাইস্কুল চত্বর। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর ৩টের পরে পরীক্ষা শেষ হলে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বোর্ড নিযুক্ত দু’জনকে স্কুলের ঘরে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান। পরিদর্শকদের গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে অশোকনগর থানার ওসি পলাশ চট্টোপাধ্যায় বাহিনী নিয়ে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে থানায় আনেন।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ছিল ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষা। ২৬১ জন পরীক্ষায় বসেছিলেন। পরীক্ষা শুরু হয় বেলা ১২টায়। মোট দশটি ঘরে পরীক্ষা হচ্ছিল। অভিযোগ, ওই দু’জন প্রতিটি ঘরে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছে টুকলি আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছিলেন। এক মহিলা পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, বোর্ড থেকে আসা এক শিক্ষক তার প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে টুকলি আছে কিনা তল্লাশি করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘অন্য অনেক মেয়ের সঙ্গেও অশালীন আচরণ করা হয়েছে। টুকলি না থাকলেও তাঁদের আলাদা একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে জোর করে সই করানো হয়েছে টুকলি করছিল বলে। অনেকে সই করেছেন। কারণ, সই না করলে শনিবার ভূগোল পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না জানানো হয়েছিল।’’

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে তিন ঘন্টার পরীক্ষার বেশির ভাগ সময় টুকলি আছে কিনা, তার তল্লাশি চালিয়েছেন পরিদর্শকেরা। ফলে পরীক্ষার্থীরা ঠিক মতো পরীক্ষা দিতে পারেননি বলেও অভিযোগ তুলেছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা আমার কাছে স্মারকলিপি দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয়েছে।’’ প্রধান শিক্ষকের দাবি, ওই দু’জন তাঁদের সঙ্গেও ভাল ব্যবহার করেননি।

পরীক্ষার্থী ও পরিদর্শক— দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে পরিদর্শকেরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাননি। পুলিশের কাছে তাঁরা দাবি করেছেন, কারও সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয়নি। টুকলি হচ্ছে দেখে ব্যবস্থা নিয়েছেন। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এ দিন স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, খাতার পৃষ্ঠা, বইয়ের পাতা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে। নিকাশি নালা, কার্নিসের উপরে দলা পাকানো টুকলির কাগজ। যদিও প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুল চত্বরে টুকলি পড়ে থাকে পারে, কিন্তু আমরা পরীক্ষার হলে কাউকে টুকলি করতে দিইনি।’’

কয়েক দিন আগেও গাইঘাটার ঠাকুরনগর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে টুকলির অভিযোগ উঠেছিল। বাইরে থেকে প্রকাশ্যে টুকলি ভিতরে দেওয়া হচ্ছে, এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। পরে অবশ্য নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement