প্রতীকী ছবি।
নিজের ঘর থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল এক তরুণের। পিছমোড়া করে বাঁধা ছিল হাত।
রবিবার ওই ঘটনার পরে চয়ন বণিক নামে ওই তরুণের দুই বন্ধু এবং এক কিশোরীকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করা হলেও রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বছর সতেরোর মেয়েটিকে। সোমবার সকালে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে মামার বাড়ি থেকে।
ঘটনাটি হালিশহরের। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। তবে কী কারণে সে আত্মঘাতী হল, তা নিয়ে অন্ধকারে পরিবারের লোকজন। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।
হালিশহরের কবিরাজপাড়ার চয়ন বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। তাঁর দাদা বুবুন বলেন, “ওকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভাইয়ের কয়েক জন বন্ধুই এর সঙ্গে জড়িত।”
পুলিশ রবিবার দুপুরে চয়নের বন্ধু বিবেক সিংহ ওরফে ভিকি এবং কৌশিক পত্রদার ওরফে বুবাইকে থানায় ডেকে আনে। ওই কিশোরীকেও থানায় এনে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
চয়ন বণিক
রাত ২টো নাগাদ থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় মেয়েটিকে। অত রাতে বাড়িতে যেতে অসুবিধা হবে মনে করে মেয়েটিকে কাছাকাছি তার মামার বাড়িতে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। সোমবার বেলা বাড়লেও ঘুম থেকে না ওঠায় তার মামার ছেলে ডাকতে যায়। সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে দরজা ভেঙে মেলে ঝুলন্ত দেহ মেলে। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। নদিয়ার কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরীর। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
ভিকি এবং বুবাইকে কেন গ্রেফতার করা হল?
পুলিশ জানিয়েছে, চয়ন খুনের ঘটনায় তাদের কোনও হাত নেই বলে প্রথম থেকে দাবি করে আসছিল ভিকি-বুবাই। কিন্তু চয়নের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, শনিবার রাতে একটি লাল রঙের মোটরবাইকে করে দুই তরুণ চয়নের কাছে এসেছিল। পুলিশ জানতে পারে ওই বাইকটি ভিকির।
ভিকি বিত্তবান পরিবারের ছেলে। সম্প্রতি তার সঙ্গে চয়নের প্রেমিকার, বছর সতেরোর ওই কিশোরীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তার জেরেই খুন বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে মনে করছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার ভিকি ও বুবাই রাত পর্যন্ত চয়নের ঘরে বসে মদ খায়। তারপরেই খুনের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, যথেষ্ট প্রমাণ মেলার পরেই ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে চয়নকে খুনের পরিকল্পনা ওই কিশোরী জানত কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় পুলিশ। সোমবার ব্যারাকপুর আদালত ভিকি ও বুবাইকে ১০ দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
চয়নের পরিবারের লোকজনের দাবি, সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই খুন করা হয়েছে ওই যুবককে।