Sweets

এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়

টাকির খেজুর গুড়ের পাটালি ও মালপোয়ার কদর আছে। পর্যটকেরা এখানে এলে কিনে নিয়ে যান। তবে এ সবের রাজ্য জুড়ে বাজার এখনও তৈরি হয়নি।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:০৩
Share:

রফতানির জন্য আনাজ প্যাকেটজাত করা হচ্ছে ভাঙড়ে (উপরে)। নিজস্ব চিত্র। বিক্রি হচ্ছে কাঁচাগোল্লা, বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

উত্তর ২৪ পরগনায় উল্লেখযোগ্য পণ্য মিষ্টি। বনগাঁ, হাবড়া, বসিরহাটের মিষ্টির কদর রাজ্য জুড়ে। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মিষ্টি পৌঁছয় এখান থেকে। মাঝে মধ্যে মিষ্টি বিদেশেও পাড়ি দেয়। বাংলাদেশিরা দেশে ফেরার পথে মিষ্টি কেনেন। হাবড়ার দই, রসগোল্লা, কাঁচাগোল্লা, বনগাঁর কাঁচাগোল্লা, রসগোল্লার সুনাম দীর্ঘ দিনের। কিন্তু বিপণনের তেমন বন্দোবস্ত না থাকায় নিয়মিত ভাবে দেশের বড় অংশে তা পৌঁছয় না বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

হাবড়ার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকার মিষ্টির বিপণনে সত্যিই যদি ব্যবস্থা করে, তা হলে হাবড়ার মিষ্টি বা বাংলার মিষ্টি গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। এখনও আমাদের মতো মিষ্টি কোনও রাজ্যে তৈরি হয় না। এটা আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরব।’’ কেন্দ্রের কাছে তাঁর আবেদন, মিষ্টি ব্যবসায় জিএসটি ও কর কমানো হোক।

জেলার অন্যতম পণ্য বসিরহাটের গামছা ব্যবসাও। এখানে বাড়ি বাড়ি গামছা তৈরি হয়। কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় তা চলে যায়। অনেক মহিলা-পুরুষ এই কাজে যুক্ত। তাঁরা মনে করছেন, সরকারি ভাবে গামছার বিপণন হলে আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন সকলেই। উৎপাদন বাড়বে।

Advertisement

জেলার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য, বনগাঁর চিরুনি। যা যশোরের চিরুনি নামে বিখ্যাত। বনগাঁ সেলুলয়েড ওয়াকার্স ইউনিয়ন সূত্রে জানানো হয়েছে, বনগাঁ শহর, ছয়ঘরিয়া এবং কালুপুর পঞ্চায়েত মিলিয়ে এখন চিরুনি কারখানা আছে প্রায় ১৩০টি। সেখানে অনেক শ্রমিক কাজ করেন। নোটবন্দি, করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতি এবং মুল্যবৃদ্ধির প্রভাবে চিরুনি ব্যবসায় এখন আগের তুলনায় ভাটা পড়েছে। বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেকে শ্রমিক বিকল্প পেশা বেছে নিয়েছেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন সেন বলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকার চিরুনির বিপণনের ব্যবস্থা করে তা হলে শ্রমিকদের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। উৎপাদন বাড়বে।’’ বনগাঁ সেলুলয়েড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহাদেব ঘোষ বলেন ‘‘সরকারি ভাবে চিরুনি বিপণন হলে অবশ্যই আমরা উপকৃত হব। উৎপাদন বাড়বে।’’

দত্তপুকুরে মাটির হাঁড়ি, কলসি, থালা, প্রদীপ-সহ বিভিন জিনিসপত্র তৈরি হয়। অনেকেই এই পেশায় যুক্ত। হাবড়া, অশোকনগর এলাকার অনেকে শোলা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া, গয়না, জামাকাপড় তৈরির শিল্পেও জেলার অনেক মানুষ যুক্ত। মূলত বিক্রির অভাবে শিল্পগুলি ধুঁকছে। সকলেই চাইছেন, কেন্দ্র বিপণনের ব্যবস্থা করুক। বনগাঁ, বসিরহাট ও বারাসতের আনাজ, ফুল, পাট রাজ্য ও দেশে রফতানি হয়। তবে সব চাষির পক্ষে তা সম্ভব হয় না। চাষিরাও চাইছেন, কেন্দ্র বিপণনের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসুক।

টাকির খেজুর গুড়ের পাটালি ও মালপোয়ার কদর আছে। পর্যটকেরা এখানে এলে কিনে নিয়ে যান। তবে এ সবের রাজ্য জুড়ে বাজার এখনও তৈরি হয়নি। এই কাজে যুক্ত মানুষজন চাইছেন, সরকার বিপণনের ব্যবস্থা করুক। জেলায় পাটজাত পণ্যের বাজার আছে। মানুষের মধ্যে চাহিদা থাকলেও বিপণনের অভাবে বাইরের মানুষের কাছে পৌঁছয় না। গোবরডাঙা-সহ বিভিন্ন এলাকায় আম চাষ হয়। আম চাষিরাও চাইছেন, জেলার আম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ুক। বসিরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় মাছ চাষ হয়। বসিরহাটের মাছ জেলার বাজারে আসে। তবে জেলার বাজারে অন্ধপ্রদেশ থেকেও মাছ আসে। মাছ চাষিদের বক্তব্য, এখানকার মাছের চাহিদা দেশে বাড়ছে। কেন্দ্র বিপণনের ব্যবস্থা করলে বাজার বাড়বে। তাঁরাও আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement