আবার ধরা পড়বে তো? নিজস্ব চিত্র
বুধবার অমাবস্যার ভরা কোটাল। কোটালের মুখে গভীর সমুদ্র উত্তাল। বেগতিক বুঝে প্রায় সমস্ত ট্রলারই বিভিন্ন ঘাটে আশ্রয় নিয়েছে। অথচ ক’দিন আগেই মরসুমের সেরা ইলিশ ধরা দিয়েছিল জালে। বর্ষার ভরা মরসুমে টানা ক’দিন ঘাটে আটকে পড়ে দুশ্চিন্তায় মৎস্যজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য, ভাল ইলিশ উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে তাঁরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন। বাজারেও ফের ইলিশের আকাল দেখা দিতে পারে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে হাজার পাঁচেক ট্রলার মাঝ সমুদ্রে ইলিশের সন্ধানে বেরিয়েছিল। বেশ কিছু ট্রলার মাছ ধরে ঘাটে ফিরেওছে। ইলিশের আকাল কাটিয়ে রূপোলি শষ্য মিলেছিল ভালই। কিন্তু প্রকৃতি বিরূপ হওয়ায় ফের তাঁরা চিন্তায়।
১৫ জুন ইলিশ ধরার মরসুম শুরু হলেও লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে গভীর সমুদ্রে বার কয়েক গিয়েও ইলিশ মেলেনি তেমন। ট্রলার মালিকের লোকসানের বহর বাড়ছিল। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে পূবালি হাওয়া আর ঝিরঝরে বৃষ্টির সহায়তায় ইলিশের ঝাঁক ধরা পড়তে শুরু করেছিল জালে।
১৪, ১৫, ১৬ অগস্ট আবহাওয়া দফতর থেকে সতর্কতা জারি করেছিল। অনেকে ফিরে আসেন ঘাটে। এরই মধ্যে ১৫ অগস্ট উত্তাল সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাসের ফলে এফবি প্রসেনজিতৎ নামে একটি ট্রলার উল্টে নিখোঁজ হন তিন মৎস্যজীবীও। একজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
কাকদ্বীপ মৎস্য বন্দরে ফিরে আসা ট্রলারের মৎস্যজীবীরা জানালেন, সমুদ্রে ইলিশ ধরার অনুকূল আবহাওয়া ছিল। বড় সাইজের ভাল মাছও মিলছিল। কিন্ত সব উলটপালট করে দিল জলোচ্ছ্বাস। বর্তমানে গভীর সমুদ্রে যা পরিস্থিতি কোনও ট্রলার মাছ ধরতে নামলে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘বুধবার অমাবস্যার ভরা কোটাল। কোটালের আগে থেকেই সমুদ্রে প্রচণ্ড জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে। ফলে সমূদ্রে যাওয়া সমস্ত ট্রলার বিভিন্ন ঘাটে ফিরে এসে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। ভরা মরসুমে এ ভাবে ট্রলার আটকে থাকায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন মৎস্যজীবীরা। অথচ ক’দিন আগে মরসুমের সেরা ইলিশ এসেছে বিভিন্ন ঘাটে। শেষ ক’দিনে প্রায় ৬০০ টন মাছ উঠেছিল।’’