Superstition

গলায় দড়ি আম গাছে, ‘ভূত তাড়াতে’ বধূর দেহের সঙ্গেই চিতায় উঠল কাটা ডাল

বধূর ‘আত্মা’ ওই গাছে বাসা বাঁধতে পারে। তাই ডাল কেটে ফেলাই মঙ্গল। না হলে অন্য লোককে ‘ভূতে’ ধরতে পারে! তাই সৎকারের সময়ে গাছের যে ডালে দেহ ঝুলছিল, সেটিও কেটে চিতায় চাপিয়েছেন বাড়ির লোকজন।

Advertisement

ঋষি চক্রবর্তী

দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১২
Share:

মৃত দেহর সঙ্গে আম ডাল ও পোড়ালেন গ্রামবাসীরা। — ফাইল চিত্র।

আমগাছের ডালে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলতে দেখা যায় বছর ছাব্বিশের এক তরুণীর দেহ। পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন বধূ। সোমবার দেগঙ্গার ওই ঘটনার পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। মঙ্গলবার দেহ ফেরে গ্রামে। সৎকারের সময়ে আম গাছের যে ডালে দেহ ঝুলছিল, সেটিও কেটে চিতায় চাপিয়েছেন বাড়ির লোকজন। তাঁদের আশঙ্কা, বধূর ‘আত্মা’ ওই গাছে বাসা বাঁধতে পারে। তাই ডাল কেটে ফেলাই মঙ্গল। না হলে অন্য লোককে ‘ভূতে’ ধরতে পারে!

Advertisement

এই ঘটনায় বিস্মিত স্থানীয় যুক্তিবাদী মানুষ জন। যুক্তিবাদী মঞ্চের সদস্য প্রদীপ সরকার বলেন, ‘‘এর আগে দেগঙ্গায় সাপে কাটা বহু লোককে ওঝা-গুনিনের কাছে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। নানা রকম কুসংস্কারে আচ্ছন্ন এখানকার মানুষ। আমরা বহু বার এ সব নিয়ে সচেতনা শিবির করেছি। তারপরেও লোকের মানসিকতা পরিবর্তন হচ্ছে না।’’ ফের এই এলাকায় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মৃতের দাদা বলেন, ‘‘আমবাগানে বোনের দেহ শাড়ির ফাঁসে জড়ানো অবস্থায় ঝুলেছিল। গ্রামবাসীদের কথা মতো ডাল কেটেছি। বোনকে দাহ করার সময়ে সেই ডাল দিয়ে চিতা সাজানো হয়।’’

প্রদীপ জানান, মৃত্যুর পরে ‘আত্মা’ ভূত হয়ে ঘুরবে, এ সব নেহাতই কুসংস্কার, অশিক্ষার ফল। মানুষের মন থেকে এ সব দূর করা খুবই দরকার। বরং এক জন তরুণী দু’বছরের শিশুসন্তানকে রেখে (দেগঙ্গার তরুণীর সন্তান) কেন অবসাদে আত্মঘাতী হলেন, বা হওয়ার কথা ভাবলেন— সে সব নিয়ে সকলের ভাবা উচিত। কারও মনে অশান্তি দূর করতে আশপাশের লোকজন, আত্মীয়েরা সাহায্য করুন একে অন্যকে। সেটা সমাজজীবনে অনেক বেশি জরুরি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement