ঠাকুরনগরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের চর্চায় ‘সৎ রঞ্জন।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে নির্বাচনী সভা করেন। উপস্থিত ছিলেন, গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন মজুমদার, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস। সেখানেই সুকান্ত বলেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মাস্টার মাইন্ড এই জেলার বাগদার বাসিন্দা সৎ রঞ্জন। মুখ্যমন্ত্রীর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ছবি আছে। আমরা বলছি না এ কথা, প্রাক্তন সিবিআই কর্তা তথা প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক উপেন বিশ্বাস বলছেন। বাগদা এবং আশপাশের এলাকা থেকে টাকা তুলে রঞ্জন বস্তা ভর্তি করে কালীঘাটে পৌঁছে দিত। আমরা জানতে চাই, কালীঘাটের কোন বড় চোরেদের কাছে সেই টাকা যেত।"
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি কাণ্ডে ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন বাগদার বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল (যাঁকে একটি ভিডিয়োয় সৎ রঞ্জন বলে উল্লেখ করেছিলেন উপেন)। এলাকার অনেকেই তাঁকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। আবার টাকা দিয়ে চাকরি পাননি এমন অনেকেও পরে মুখ খোলেন চন্দন-প্রসঙ্গে। ভোটের আগে ফের সেই প্রসঙ্গ উস্কে দিলেন সুকান্ত।
এ বিষয়ে বাগদার বিধায়ক তথা তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘নারদা কাণ্ডে ওঁদের দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। এ বিষয়ে সুকান্তবাবুর কি কোনও বক্তব্য আছে?’’
এ দিন বিশ্বজিৎকেও এক হাত নিয়েছেন সুকান্ত। তাঁর দলবদলের প্রসঙ্গ তুলে সুকান্ত বলেন, ‘‘এখনও সময় আছে, ঠিক হয়ে যান। না হলে সৎ রঞ্জনের মতো সিবিআই-ইডির নিমন্ত্রণ আপনার বাড়িতে না চলে আসে!" বিশ্বজিতের কথায়, ‘‘জনভিত্তি না থাকায় ওঁদের মাথার ঠিক নেই। যা খুশি তাই বলছেন। সিবিআই ইডি ছাড়া ওঁদের হাতে আর কোনও অস্ত্র নেই।’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠাকুরনগর সফর ঘিরে বিজেপি-তৃণমূল গোলমাল বেধেছিল। অভিষেকের নাম না করে সুকান্ত বলেন, "একটা চোর ঠাকুরনগরে ঠাকুরবাড়িতে ঢুকতে গিয়েছিল। মতুয়া ভাইয়েরা দেখিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা কী করতে পারেন। মতুয়ারা কোনও চোরকে দিয়ে ঠাকুরবাড়ি অপবিত্র হতে দেননি।" তাঁর আরও কটাক্ষ, ‘‘চোর মন্দিরে ঢুকলে মন্দির থেকে সোনার গয়না চুরি হয়ে যেতে পারত।" সুকান্তের কথায়, ‘‘তৃণমূলের উঁচু তলার চোরেদের রাজ্য বিজেপি তিহার জেলে পাঠাবে। নিচুতলার চোরেদের আপনারা ভোটে হারিয়ে পঞ্চায়েত থেকে তাড়ান।" সভা শেষে সুকান্ত মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে যান। যদিও মন্দিরে ঢোকেননি। সুব্রত ঠাকুরের সঙ্গে কথা বলেন।
বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘ওঁরা মানুষের পাশে থাকেন না। মানুষ ওঁদের প্রত্যাখ্যান করেছেন।”