আনাজ বাগানে কাজে হাত লাগিয়েছে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র ।
মিড ডে মিলের বরাদ্দ কম বলে অভিযোগ আছে প্রায় সব স্কুলে। অন্য দিকে, বাজারে আনাজের দাম দিন দিন লাফিয়ে বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্কুলেই তৈরি হয়েছে আনাজ বাগান। পড়ুয়ারা প্রতি দিন বাগানে জৈব সারে তৈরি বিভিন্ন সব্জি পাচ্ছে মিড ডে মিলের পাতে। স্কুল সূত্রের খবর, ২০২২ সালের পরে বাজার থেকে লঙ্কা ও আলু ছাড়া প্রায় কিছুই কিনতে হচ্ছে না। এই আনাজ বাগান তৈরি হয়েছে হিঙ্গলগঞ্জ থানার কনকনগর এসডি ইন্সটিটিউশনে।
স্কুল সূত্রের খবর, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির প্রায় ৪০০ জন পড়ুয়া মিড ডে মিল খায়। পড়ুয়া পিছু যা মিড ডে মিলের বরাদ্ধ, তা দিয়ে ভাল মানের খাবার দেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে স্কুল সিদ্ধান্ত নেয়, স্কুলের সামনে ও ভিতরে যে সাড়ে ছ’কাঠা জায়গা আছে, সেখানে আনাজ বাগান তৈরি করা হবে। সেই সঙ্গে স্কুলের চারপাশে যে জায়গা আছে, সেখানে পেঁপে, কলা, বেগুন, ওল গাছ লাগানো হবে। বাগান তৈরির প্রাথমিক খরচ স্কুলের উন্নয়ন তহবিল থেকে করা হয়। স্কুলে দু’টি জায়গায় গর্ত করে সেখানে বর্জ্য ফেলে জৈব সার তৈরি করা হয়। সেই সার দেওয়া হয় আনাজ বাগানে। বাগান মূলত পরিচর্যা করেন স্কুলের এক নিরাপত্তারক্ষী রেভাস মণ্ডল। মাঝে মধ্যে হাত লাগান স্কুলের শিক্ষক দীপেন্দ্রনাথ মণ্ডল, সুদর্শন মণ্ডল সহ কিছু পড়ুয়া। স্কুল শুরুর আগে-পরে পরিচর্যা করেন সকলে। আনাজ তুলতে বাগানে কখনও কখনও পড়ুয়ারাও যায়। বাগানে এখন আছে ঝিঙে, ওল, কলমি শাক, বেগুন,করলা, ভেন্ডি, শশা, পটল, লেবু, পেঁপে, কলা, মানকচু। এ ছাড়া, লাউ ও কুমড়ো গাছও আছে। সেই সঙ্গে স্কুল চত্বরে আম, কাঁঠাল, জাম, আমলকী, সবেদা গাছ আছে।
মিড ডে মিলের খাওয়ার ঘরের পাশে একটি বড় পুকুর আছে। সেখানে মাছ চাষও হয়। এই পুকুরে যা মাছ হয়, তাতে বছরে ৩-৪ বার গোটা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মাছের ঝোল, ভাত খাওয়ানো হয় বলে স্কুল সূত্রের খবর। গত বছর থেকে স্কুলের নামে যে চাষের জমি আছে, সেখানে স্কুলের তরফে সুগন্ধি চালের চাষ করা হয়েছে। ওই চাল দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রাখিপূর্ণিমার দিন ছাত্রছাত্রীদের পায়েস খাওয়ানো হবে।
প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মিড ডে মিলের আনাজ হিসাবে লঙ্কা ও আলু ছাড়া তেমন কিছু কিনতে হয় না। তাই সেই টাকা দিয়ে আমরা কখনও চিংড়ি মাছ কিনি। এ ভাবে আমরা ভাল মানের মিড ডে মিল দিতে পারছি পড়ুয়াদের। না হলে মিড ডে মিলের বরাদ্দ টাকায় ভাল খাবার দেওয়া সম্ভব হত না। এই বাগান আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে।”