অসুস্থ বন্ধুর পাশে এ বার প্রতিবেশী স্কুলের ছাত্রীরাও

এ বার সরস্বতী পুজোর খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে সেই চাঁদার টাকা ওই ছাত্রের পরিবারের হাতে তুলে দিল দত্তপুকুরের আরও একটি স্কুলের মেয়েরা।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

উৎসব পরে, আগে বন্ধুর প্রাণ। এই ভাবনায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ বার দাঁড়াল ছাত্রীরাও।

Advertisement

মুখে মুখে খবর কিছুটা ছড়িয়েছিল, খবরের কাগজ পড়ে জেনেছিলেন বাকিরা। সরস্বতী পুজো কাটছাঁট করে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত দত্তপুকুরের মহেশ বিদ্যাপীঠের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের পাশে গোটা স্কুল দাঁড়িয়ে অন্যদের কাছে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছিল। স্কুলের তরফ থেকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এক লক্ষ টাকা।

দরকার আরও। এ বার সরস্বতী পুজোর খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে সেই চাঁদার টাকা ওই ছাত্রের পরিবারের হাতে তুলে দিল দত্তপুকুরের আরও একটি স্কুলের মেয়েরা। প্রতিদিন ওই ছাত্রকে রক্ত দিতে হচ্ছে। শুক্রবার তাই অসুস্থ ছাত্রের প্রতিবেশী এবং তার স্কুলের প্রাক্তন ছাত্ররা রক্ত দিলেন।

Advertisement

বর্তমানে স্কুলের ফার্স্ট বয় রূপঙ্কর বসু রাজারহাটের টাটা মেমোরিয়াল ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসায় প্রয়োজন ১০টি কেমোথেরাপি ও প্লেটলেট। এ জন্য লাগবে ন’লক্ষ টাকা। রূপঙ্করের পরিবারের সম্বল ছোট্ট মুদির দোকান। চিকিৎসা চালাতে তাই অথৈ জলে পরিবার। তা জানতে পেরে ছোট করে সরস্বতী পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চাঁদার টাকা রূপঙ্করের চিকিৎসার জন্য দেয় তারই স্কুলের ছেলেরা। বন্ধুর জন্য আরও টাকা দিতে শুক্রবার এগিয়ে আসে দত্তপুকুর নিবাদুই উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।

সরস্বতী পুজোর খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে ৬০ হাজার টাকা এ দিন রূপঙ্করের পরিবারের হাতে তুলে দেয়। তাঁর স্কুলের মেয়েরা যে নিজেরাই যে এমন কাজ করবে, ভাবতে পারেননি প্রধান শিক্ষিকা লোপামুদ্রা ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, ‘‘ওদের প্রস্তাবটা শুনে প্রথমে চোখে জল চলে এসেছিল।’’ ছাত্রীরা কী বলছে? দশম শ্রেণির রোশনি দে, অষ্টম শ্রেণির স্নেহা চক্রবর্তীদের কথায়, ‘‘স্কুলটা না হয় আলাদা, কিন্তু রূপঙ্কর তো আমাদের মতোই ছাত্র। ওর স্কুল পারলে আমরা কেন নয়?’’

এ দিন রূপঙ্করের স্কুলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কাগজে খবরটি বেরোনোর পরে দেশ-বিদেশ থেকে অনেকে যোগাযোগ করেছেন। কাতার থেকে রূপঙ্করের স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ইন্দ্রজিৎ দাস, দিল্লি থেকে সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের মতো অচেনা মানুষরা স্কুলে যোগাযোগ করে আর্থিক সাহায্য করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। প্রতিদিন দরকার রক্তের। শুক্রবার ধ্যানেশ নারায়ণ মৃধা-সহ পাঁচ জন প্রাক্তন ছাত্র রূপঙ্করকে রক্ত দিয়েছেন। রক্ত দিতে নাম লেখাচ্ছেন আরও প্রাক্তনীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement