অসচেতন: হেলমেট ছাড়া বাইক আরোহীরা দিব্যি ঘুরছেন বনগাঁর পথে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল বাইক আরোহী দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার। জখম হয়েছেন তাঁর এক বন্ধু।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার গোলদারমোড় এলাকায় যশোর রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শৌভিক বিশ্বাস (১৮)। বাড়ি বকচরা এলাকায়। জখম যুবকের নাম সৌরভ দাস। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পরে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা ট্রাকটি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। গাইঘাটা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যশোর রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। পুলিশ ট্রাকটি আটক করেছে। চালক পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত এবং জখম যুবক কারও মাথায় হেলমেট ছিল না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদপাড়া থেকে চাউমিন খেয়ে বাইক নিয়ে দুই বন্ধু বাড়ি ফিরছিলেন। বাইক চালাচ্ছিলেন সৌরভ। পিছনে ছিলেন শৌভিক। গোলদারমোড় এলাকায় গ্রামের মধ্যে আচমকা একটি ট্রাক যশোর রোডে উঠে আসে। বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। দু’জনে বাইক থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়েন। মাথায় আঘাত পান। শৌভিকের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শৌভিক খরুয়া রাজাপুর হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। দুই ভাইবোনের মধ্যে তিনিই বড়। বাবা সাধন ট্রাক চালান। বৃহস্পতিবার ট্রাক নিয়ে মুর্শিদাবাদ গিয়েছিলেন। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন। সদ্য সন্তানহারা বাবার কথায়, ‘‘ছেলেটার স্বপ্ন ছিল, বড় হয়ে পুলিশ হবে। সমাজের সেবা করবে। ওকে নিয়ে আমাদেরও অনেক স্বপ্ন ছিল। সব শেষ হয়ে গেল।’’
বনগাঁ মহকুমা জুড়েই হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। এক বাইকে তিনজনের দেখা মিলবে হামেশাই। কারও মাথায় হেলমেট থাকে না। থাকলেও শুধু চালকের মাথায়। বছরখানেক আগেও পুলিশি ধরপাকড় ছিল। তখন হেলমেট পরার প্রবণতা বেড়েছিল। পেট্রল পাম্পগুলিতে আগে হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া হচ্ছিল না। এখন হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া হয়। পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘নিয়মিত ধরপাকড় চলে। বাইক চালকদের বুঝতে হবে, পুলিশের ভয়ে নয়, নিজেদের জীবনের স্বার্থে হেলমেট পরাটা জরুরি।’’