মৃতা স্নেহা মাণ্ডি। —নিজস্ব চিত্র।
বছর সতেরোর এক ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার গড়িয়া এলাকায়। পরিবার সূত্রে খবর, যাদবপুর বিদ্যাপীঠের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছিল মেয়েটি। নাম স্নেহা মুণ্ডা। অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্নেহার বাবা মারা গিয়েছেন অনেক আগে। দ্বাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়া এবং তার বোন থাকত বাড়িতে। মা কাজের সূত্রে বাইরেই থাকেন বেশির ভাগ সময়। পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ওই ছাত্রীর টেস্ট পরীক্ষার ফল বেরোয়। মাকে ফোন করে স্নেহা জানায় সে পাশ করেছে। তখন মা তাকে ফলাফলের একটি ছবি তুলে তাঁকে পাঠাতে বলেছিলেন। তার পরেই এই কাণ্ড। পরিবারের দাবি, টেস্ট পরীক্ষায় পাশ করতে না পেরে লজ্জায় আত্মঘাতী হয়েছে স্নেহা। ফ্ল্যাটে ঢুকে মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখে চিৎকার ওঠেন মা। ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ।
মৃতার মেসো প্রলয় মিশ্র বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যে বসতে পারবে না সেটা আমরা জানতে পারিনি আগে। মা ছাড়া মেয়েটির আর কেউ নেই। মা অন্যত্র থাকে কাজের সূত্রে। ও ফোন করে মাকে বলেছিল, পাশ করে গিয়েছে পরীক্ষায়। তার পরই আজ এই অবস্থা।’’ ছাত্রীর পরিবার জানাচ্ছে, বেশ অভাবের সংসার স্নেহাদের। ফাইনাল পরীক্ষার ফর্ম পূরণের জন্য টাকাও ছিল না। মা কষ্ট করে টাকা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়ে পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। তাই ফর্ম পূরণ করতে পারেনি। ওই টাকায় বিরিয়ানি খেয়ে বাড়িতে ফেরে সে। মা কাজে চলে যাওয়ায় বাড়ি ফাঁকাই ছিল। মায়ের সঙ্গে এক বার ফোনে কথাও হয় ছাত্রীর। কিন্তু তার পরেই গলায় ওড়না জড়িয়ে আত্মঘাতী হয় স্নেহা। শনিবার কাজ সেরে মা বাড়িতে ঢোকার সময় দেখেন ফ্ল্যাটের দরজা খোলা। ঘরে ঢুকে মেয়েকে ওই অবস্থায় দেখে তিনি চিৎকার শুরু করেন। পরে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর যায় পুলিশে। ছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।