এ ভাবেই পড়ে থাকে ইমারতি দ্রব্য। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার এক ধারে এলিয়ে পড়ে ইট, স্টোনচিপস, বালি, পাথর। রাস্তার অনেকটা অগোছাল ভাবেই দখল নিয়েছে তারা। গাড়ির চাকায় চাকায়, পায়ে পায়ে ক্রমে আরও সরে এসেছে রাস্তার উপরে। যাকে পাশ কাটিয়ে চলছে যাতায়াত। আর যার অবধারিত ফল, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। শুধু আশঙ্কাই নয়, মাঝে মধ্যে ছোটখাট দুর্ঘটনা লেগেই আছে ক্যানিং মহকুমার নানা রাস্তায়। এমনকী, প্রাণও গিয়েছে। তারপরেও প্রশাসনের হুঁশ নেই বলে অভিযোগ। আর যারা রাস্তার ধারে ইমারতী সামগ্রী ফেলে রাখছে, তাদের সচেতনতার অভাবটাও চোখে পড়ার মতো প্রকট হচ্ছে দিন দিন।
ক্যানিং মহকুমার রাস্তার দু’পাশে বেআইনি ভাবে ইমারতি দ্রব্য রেখে ব্যবসা চালাচ্ছেন কিছু মানুষ। এ নিয়ে ক্ষোভও বাড়ছে এলাকাবাসীর মধ্যে। রবিবার রাতে ক্যানিঙের কুলতলির কাছে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা স্টোনচিপসে্ ধাক্কা লেগে অটো উল্টে এক ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি তাঁতকল মোড়ের কাছে একটি অটোকে পাশ কাটাতে গিয়ে রাস্তার পাশে রাখা বালিতে পিছলে গিয়ে মোটরবাইক উল্টে পড়ে গুরুতর জখম হন চালক।
মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, ‘‘রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য রাখা হয় জানি। কিন্তু এ নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ করে না। তা ছাড়া, রাস্তাগুলি যে সব দফতরের অধীনে, তারাও কিছু বলে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানানো হবে। প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ক্যানিং-বারুইপুর রোড, ক্যানিং ১ ব্লকের ক্যানিং-গোলাবাড়ি রোড, তাঁতকল মোড, জয়দেবপল্লি, শ্মশানঘাট রোড-সহ বিভিন্ন জায়গায় রমরমিয়ে চলছে ইমারতি দ্রব্যের বেআইনি ব্যবসা। রাস্তা আটকে ইমারতি দ্রব্য রাখার পিছনে রাজনৈতিক নেতা ও শাসকদলের মদত রয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। শাসকদলের বেশ কিছু নেতাও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে তাঁদের দাবি। রাস্তার উপরে লরি দাঁড় করিয়ে মাল ওঠা নামা করা হয়। ফলে রাস্তাও সরু হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে যানজট, এমনটাই জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব মণ্ডল, মনিরুল মোল্লারা।
এক ইমারতি ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘এমনিতে গ্রামের সরু রাস্তা। বড় গাড়ি ঢুকতে পারে না। সে কারণে রাস্তার পাশে বালি, পাথর ফেলতে হয়। পরে তা লোক দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।’’ কিন্তু স্থানীয়রা জানান, কখনওই সে সব সরানো হয় না। সব মুখ বুজে মেনে নিতে হচ্ছে।
ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশরাম দাস বলেন, ‘‘কেউ কেউ যে রাস্তার ধারে বালি, পাথর রেখে ব্যবসা করছেন, তা আমার নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘শুধু ক্যানিং নয়, অনেক জায়গাতেই রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য ফলে রাখা হচ্ছে। বললেও তা সরানো হচ্ছে না। প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা করে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’