General Strike

উত্তরের পথে লোকজন কমই

এ দিন সকালে হাবড়া স্টেশনে টিকিট কাউন্টার ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বামদের বিরুদ্ধে। কাউন্টারের কাচ ভেঙে যায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ০২:৫৩
Share:

সহযোদ্ধা: মিছিল বাম-কংগ্রেসের। বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

দোকানপাট অধিকাংশই খোলা রইল। কিন্তু রাস্তায় ক্রেতার দেখা বিশেষ মেলেনি। সরকারি বাস চললেও, বেসরকারি বাসের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। শ্রমিকদের হাজিরা কম থাকায় উত্তরের কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে গেলেও, দক্ষিণের শিল্পাঞ্চল ছিল সচল। তবে জেলার প্রায় সর্বত্রই সড়ক ও রেল অবরোধের ফলে যানবাহন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। নাকাল হতে হয় যাত্রীদের।

Advertisement

অন্যন্য বন্‌ধগুলির সঙ্গে এ দিনের বন্‌ধে লক্ষণীয় বিষয়, তৃণমূলের উদাসীন থাকা। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের এ দিন পথে দেখা যায়নি। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হলেও রাজনৈতিক সংঘর্ষ কোথাও হয়নি। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, তৃণমূল এ দিন বামেদের ফাঁকা ময়দান ছেড়ে দিয়েছে।

এ দিন সকালে হাবড়া স্টেশনে টিকিট কাউন্টার ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বামদের বিরুদ্ধে। কাউন্টারের কাচ ভেঙে যায়। শেখর নন্দী নামে এক রেলকর্মীর আঙুল কেটে যায়। হাবড়ায় রেল অবরোধ হয়। যশোর রোড অবরোধ করে বন্‌ধ সমর্থকদের ক্রিকেট খেলতে দেখা যায়। বনগাঁ মহকুমায় ধর্মঘটে মিশ্র ছবি দেখা গিয়েছে। পেট্রাপোল বন্দরে অন্যান্য দিনের মতোই পণ্য রফতানি-আমদানির কাজ হয়েছে।

Advertisement

মিশ্র সাড়া পড়েছে ব্যারাকপুর এবং বসিরহাট মহকুমায়। দোকান-বাজার সর্বত্রই খোলা ছিল। তবে একটু বেলার দিকে রাস্তায় মানুষজন বিশেষ দেখা যায়নি। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের টিটাগড়, ব্যারাকপুর, ইছাপুর, শ্যামনগর, নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া— সর্বত্র রেল অবরোধ করেন বন্‌ধে সমর্থকেরা। সাতসকালে ব্যরাকপুরের ঘোষপাড়ায় টায়ার জ্বালিয়ে ঘোষপাড়া রোড অবরোধ করা হয়। বেলার দিকে আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় সড়ক অবরোধ হয়। তার ফলে ট্রেন ও বাসের যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অনেকেই কর্মস্থলে পৌঁছেছেন অনেক দেরিতে।

বসিরহাটে সকালের দিকে হাট-বাজারে ভালই ভিড় ছিল। ট্রেন-বাসের পাশাপাশি ছোট গাড়িও চলেছে। সকালের দিকে বন্‌ধ সমর্থকদের দেখা না মিললেও, বেলা বাড়তেই ঝান্ডা হাতে রাস্তায় নেমে পড়েন তাঁরা। মিছিল দেখে অনেকে ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে দেন। তবে পরের দিকে ফের দোকান খুলে দেন অনেকে। বসিরহাট, ন্যাজাট চৈতল রোডে রাস্তা অবরোধে বামেদের সঙ্গে সামিল হয় কংগ্রেসও। যাত্রী না থাকায় হিঙ্গলগঞ্জ এলাকায় বেসরকারি বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাসনাবাদ থানার বায়লানি বাজার, তালতলা বাজার, টাকি এলাকায় বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ছিল।

সকাল ৮টা থেকে আমডাঙার গাদামারা হাট এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধ চলে। আওয়ালসিদ্ধ চৌমাথায়, হাবড়া নৈহাটি রোডেও অবরোধ হয়। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলায় বন্‌ধ সর্বাত্মক হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় তৃণমূল ও পুলিশ আমাদের উপরে আক্রমণ করেছে। এর থেকে প্রমাণ হয় তৃণমূল ও বিজেপির উদ্দেশ্য এক।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘জেলায় বন্‌ধ সফল হয়নি। মানুষ পথে নেমে নিজেরাই বন্‌ধ ব্যর্থ করে দিয়েছেন।’’ অন্যান্য বন্‌ধের মতো এ দিন শাসক দলের নেতা-কর্মীদের পথে নেমে বন্‌ধের বিরোধিতা করতে দেখা গেল না কেন? জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘এ বার আমরা সিপিএম-কংগ্রেসকে জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলাম। যাতে তারা বন্‌ধ সফল করে কিছুটা শক্তি সঞ্চয় করতে পারে।’’ তবে কোনও নেতা প্রকাশ্যে এই কথা বলতে রাজি হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement