এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের কাজ। বন দফতরের অনুমতি নিয়ে ইতিমধ্যে মধু সংগ্রহ করতে সুন্দরবনে পাড়ি দিয়েছেন মউলেরা। ১৪ মে পর্যন্ত চলবে জঙ্গলে মধু সংগ্রহের কাজ। রাজ্য সরকারের তরফে মউলেদের থেকে এই মধু কিনবে বন দফতর।
আগের বছর রাজ্য সরকার মধুর দাম দিয়েছিল কেজি প্রতি ১০০ টাকা। কিন্তু এ বছর রাজ্য সরকার মধুর দাম কেজি প্রতি ১১০ টাকা করে ঠিক করেছে। এতে কিছুটা হলেও খুশি মউলেরা। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর সৌমিত্র দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘অনেকেই সরকারি অনুমতি নিয়ে মধু সংগ্রহ করতে যান। এঁদের মধ্যে অনেকে দুর্ঘটনার কবলেও পড়েন। ওই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য বিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বার ৬০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বাগনা রেঞ্জ অফিস ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সজনেখালি রেঞ্জ অফিস থেকে ৯১টি নৌকায় ৬৩৭ জন মউলে অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছেন। ইতিমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুমিরমারি, মোল্লাখালি, সাতজেলিয়া, বালি, গোসাবা, ঝড়খালি, চুনোখালি, জীবনতলা, মৌখালি, ক্যানিং-সহ উত্তর ২৪ পরগনার সামসেরনগর, হেমনগর, কালীতলা, মিনাখাঁ-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মউলেরা মধু সংগ্রহ করে বন দফতরে বিক্রি করা শুরু করেছেন। মউলেরা মধুর সঙ্গে সংগ্রহ করা মোমও বিক্রি করেন।
নিয়ম অনুযায়ী, মউলেরা যে রেঞ্জ অফিস থেকে সরকারি অনুমতি নিয়ে জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছেন সেই সংগৃহীত মধু তাঁদের সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ অফিসেই জমা করতে হয়। গোসাবার কার্তিক সর্দার, মৌখালির আজিজুল মোল্লারা বলেন, ‘‘বাড়তি রোজগারের আশায় আমরা এই সময়টা জঙ্গলে চলে যাই মধু আনতে। জঙ্গলে প্রতিপদে বিপদের আশঙ্কা থাকে। বন দফতর এ বার মধুর দাম কিছুটা বাড়ানোয় কিছুটা লাভ হবে।’’