খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের পর্যটন তালিকায় সাইবনাকে অন্তর্ভুক্ত করতে পরিকল্পনা শুরু করল প্রশাসন। এলাকার রাস্তার সংস্কার, নিকাশি ব্যবস্থা তৈরির প্রতিশ্রুতিও মিলেছে।
শনিবার সকালে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ দত্তপুকুরের এই এলাকায় ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। সে সময়ে তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত শিবম রায় স্থানীয় বিজেপি নেতা সাগর বিশ্বাসকে চড় মারেন বলে অভিযোগ। ঘটনাটি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়। স্থানীয় মানুষ অভিযোগ তোলেন, চড়-কাণ্ডে গোলমালের জেরে সে দিন দ্রুত এলাকা ছেড়েছিলেন মন্ত্রী। এলাকার বহু অনু্ন্নয়নের কথা তাঁকে বলার সুযোগই মেলেনি।
ওই ঘটনার পরে গ্রামবাসীদের অভিযোগগুলি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মঙ্গলবার গ্রামে আসেন প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। বিডিও, ইছাপুর নীলগঞ্জের পঞ্চায়েতের প্রধান এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধি সাইবনা মন্দির পরিদর্শন করেন মঙ্গলবার। মন্দিরকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র তৈরির জন্য আলোচনা হয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে। মাপজোক করা হয় কয়েকটি রাস্তা। নর্দমা তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়, জমি দেখা হয়।
রথীন বলেন, ‘‘আমি পর্যটন দফতরকে জানাই, প্রাচীন মন্দিরটিকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে। সেই সঙ্গে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন করার উদ্যোগ করতে বলেছি দফতরকে। জমির পরিমাণ, ট্রাস্টি বোর্ডের নিয়ম ইত্যাদি খুঁটিনাটি দেখে পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে পর্যটন দফতরে। গ্রামবাসীরা নানা সমস্যার কথাও জানিয়েছেন। চেষ্টা করছি, দ্রুত সমাধানের।’’ ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের প্রধান নরেন্দ্রনাথ দত্ত জানান, মন্দিরের কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। বারাসত ১ ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ উত্তম দাস বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদের যৌথ আর্থিক ব্যয়ে এলাকার রাস্তা সংস্কার করা হবে। তৈরি হবে নর্দমা। পিচ রাস্তার সংস্কারও শীঘ্রই শুরু হবে।’’ বারাসত ১ বিডিও সৌগত পাত্র জানিয়েছেন, খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিকল্পনা করে জেলা পর্যটন দফতরকে বিস্তারিত জানানো হবে। রাস্তা সংস্কার ও নর্দমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ করা হচ্ছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্দিরের রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটার সময়ে খুবই কষ্ট হয়। রাস্তা হলে ভালই হবে। নর্দমা হলেও নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এলাকাবাসী। পানীয় জলের ব্যবস্থা করলে খুবই উপকার হয়। এখানকার জল খাওয়া যায় না।’’
মন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন মন্দির কমিটির সম্পাদক দীপ্তেন রায়চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘‘৫ ফেব্রুয়ারি এখানে মেলা হয়। পুজো দিতে আসেন হাজার হাজার মানুষ। খালি পায়ে আসতে কষ্ট হয় পুণ্যার্থীদের। মেলার আগে রাস্তা হলে মানুষ খুবই উপকৃত হবেন। আর এটি যদি পর্যটনক্ষেত্র হয়, তা হলে আমরা খুবই খুশি হব।’’ তবে স্থানীয় কারও কারও প্রশ্ন, শুধু একটি মন্দিরকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র করা সহজ নয়। আরও কিছু আকর্ষণীয় কেন্দ্র তৈরি করা উচিত।
কী বলছেন বিজেপি নেতা সাগর?
তাঁর কথায়, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট। মন্দির নিয়ে রাজনীতি না করে উন্নয়ন করলে খুশি হব। আমি মন্ত্রীকে এটাই বলেছিলাম। যত দ্রুত কাজ হবে, ততই মঙ্গল।’’