উদ্বোধন: মেলার মঞ্চ। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।
গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ ছিল সুন্দরবন কৃষ্টি মেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসব। এ বছর সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার থেকে শুরু হল রজতজয়ন্তী বর্ষের মেলা।
উদ্বোধন করেন সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, নেতাজি গবেষক পূরবী রায়, সাহা ইন্সিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের অধিকর্তা অধ্যাপক গৌতম ভট্টাচার্য-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
কুলতলি মিলনতীর্থ সোসাইটির উদ্যোগে গত ২৫ বছর ধরে বাসন্তীতে এই মেলা হয়ে আসছে। এই মেলার মঞ্চ থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণ হয়েছে সুন্দরবনবাসীর। মেলাপ্রাঙ্গণ থেকেই তাঁরা মাতলা নদীর উপরে সেতুর দাবি তুলেছিলেন। সেই দাবি পূরণ হয়েছে। মেলার মঞ্চ থেকে দাবি উঠেছিল, বাসন্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ তৈরির। সেই দাবি মেনে সুকান্ত কলেজ তৈরি হয়েছে ভাঙনখালিতে। এ ছাড়াও, ২২টি জুনিয়র হাইস্কুল, আইটিআই কলেজের দাবিও পূরণ হয়েছে। এই মেলার মঞ্চ থেকে ক্যানিং থেকে ঝড়খালি তথা সুন্দরবনে রেললাইন সম্প্রসারণের দাবি তুলেছিলেন সুন্দরবনের লক্ষাধিক মানুষ। তৎকালীন লোকসভার স্পিকার সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের হাতে তাঁদের স্বাক্ষরিত দাবিসনদ তুলে দিয়েছিলেন। সেই দাবি মেনে ক্যানিং থেকে ঝড়খালি পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে মাতলা নদীর উপরে রেলসেতু নির্মাণের কাজ অনেকটা এগিয়েও গিয়েছে। কিন্তু মাঝপথে আচমকাই তা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে বার বার রেল বাজেটে উপেক্ষিত থেকেছে রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ। এ বার তাই নতুন করে সুন্দরবনে রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ ত্বরান্বিত করার দাবি উঠেছে মেলার মঞ্চ থেকে। সুন্দরবন কৃষিপ্রধান এলাকা। এলাকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে সুন্দরবনে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার দাবিও তোলা হয়েছে রজতজয়ন্তী বর্ষের মেলার মঞ্চ থেকে।
মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা লোকমান মোল্লা বলেন, “এটা শুধু মেলা নয়, সুন্দরবনের মানুষের দাবি আদায়ের মঞ্চ। প্রতি বছর এই মেলা থেকে তাঁদের নানা দাবি-দাওয়া তোলা হয়। এ বার তাঁদের দাবি, অবিলম্বে থমকে থাকা সুন্দরবনে রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ চালু করতে হবে এবং সুন্দরবনের ছেলেমেয়েদের কথা মাথায় রেখে এখানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে হবে। ইতিমধ্যেই মেলায় আগত সুন্দরবনবাসীর স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর মেলা বন্ধ ছিল। এ বার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও সমস্ত সরকারি নির্দেশিকা মেনে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখেই মেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
—