সম্প্রতি হাবড়ায় দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগের দাবিতে বামপন্থীদের মিছিল। ফাইল চিত্র
প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় হাই কোর্টের বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ বাতিল হয়েছে। ওই নির্দেশের পর বিভিন্ন জেলায় শিক্ষকদের বরখাস্ত করা হচ্ছে। তালিকায় কাদের নাম আছে, তা নিয়ে জোর চর্চাও শুরু হয়েছে। কিন্তু ওই তালিকায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কারও নাম আছে কি না, তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি মনে করছে, বেআইনি ভাবে শিক্ষক নিয়োগের রাঘব-বোয়ালেরা এই জেলায় রয়েছেন। তাই শাসকদলের মদতে তালিকা আপাতত চেপে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগাগোড়া গোপনীয়তা বজায় রাখা হচ্ছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে। অভিযোগ, ওই কাজে সরকারি আধিকারিকদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে।
তালিকায় কাদের নাম আছে তা জানতে সোমবার একাধিকবার ফোন করা হয় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের জেলা স্কুল পরিদর্শক কৌশিক রায়কে। যদিও তিনি ফোন ধরেননি। নিয়ম অনুযায়ী বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট এসআই অফিসগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা। বনগাঁ ও বসিরহাটের কয়েক জন এসআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সোমবার তাঁরা জানান, সেই তালিকা তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। সরকারি ভাবে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম জানা না গেলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি কিছু নামের তালিকা ঘুরছে। সেগুলি ভুয়ো না সঠিক, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করছেন না শিক্ষা দফতরের কর্তারা।
এই বিষয়ে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-এর বনগাঁ মহকুমার সম্পাদক পীযূষকান্তি সাহা বলেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মাথারা সব এই জেলায় রয়েছেন। শাসক দলের লোকজনও জড়িয়ে আছেন। তাই তালিকা প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা চাই অবিলম্বে তালিকা প্রকাশ্যে আনা হোক। কিছুদিন পরই স্কুল খুলবে। কারা প্রকৃত শিক্ষক, তা জানা জরুরি।’’
বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারের কথায়, ‘‘যে সব তৃণমূল নেতারা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিচালনা করেন, তাঁদের বড় অংশ এই দুর্নীতিতে জড়িত। তাই দলের স্বার্থে তালিকা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘তালিকা প্রকাশের সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। হাই কোর্টের নজরদারিতে এবং নির্দেশে অনুসন্ধান, তদন্ত চলছে। বিরোধীরা আদালতের অনুসন্ধান নিয়েও সন্দেহ করছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই বলার নেই।’’