অবরোধ: পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি। নিজস্ব চিত্র।
দোকানে বসে এক পল্লি চিকিৎসক কোভিড ভ্যাকসিন দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায়। এর আগে কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন শিবির নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল। সেই শিবিরে সাংসদ মিমি চক্রবর্তী নিজেও ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। চক্রের মূল মাথাকে পরে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার আকাইপুর এলাকায় পল্লি চিকিৎসক কোথা থেকে ভ্যাকসিন পেলেন, কেন তিনি হঠাৎ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভ্যাকসিন দিতে শুরু করলেন, সে সব নিয়ে শুরু হয়েছে খোঁজখবর। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই পল্লি চিকিৎসক-সহ দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বেশ কয়েক জন এদিন ভ্যাকসিন নিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। টাকা-পয়সার লেনদেন হয়েছে কিনা, খোঁজ চলছে। প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে? কসবা-কাণ্ডে যেমন দেখা গিয়েছিল, ভ্যাকিসনের বদলে দেওয়া হয়েছিল অন্য কিছু। গোপালনগরে ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা।
এ দিকে, পল্লি চিকিৎসক ভ্যাকসিন দিচ্ছেন শুনে প্রতিবাদে নেমে পড়ে বিজেপি। টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ঘণ্টা দেড়েক পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘মঙ্গলবার আকাইপুরে টিকাকরণের তারিখই ছিল না। অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে জানানো হয়েছে। আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’’
এদিন আকাইপুর বাজার এলাকায় একটি দোকানে বসে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। বিজেপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা হাজির হন। শুরু হয় অবরোধ-বিক্ষোভ। দলের নেতা বিকাশ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা বিএমওএইচের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সেখান থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার এই এলাকায় টিকাকরণের কর্মসূচি ছিল না। তা ছাড়া, টিকা দিতে হলে স্বাস্থ্যকর্মীরা দেবেন। কোনও দোকানে বসে হাতুড়ে ডাক্তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই কাজ করতে পারেন না। টিকা তিনি কোথা থেকে পেলেন, সে প্রশ্নও উঠছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা ভ্যাকসিন নিলেন, তাঁদের কোনও শারীরিক সমস্যা হলে কে তার দায় নেবে?’’
বিজেপির দাবি, যাঁর দোকান থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছিল, তিনি তৃণমূল কর্মী। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের ঘনিষ্ঠ। এই ঘটনায় প্রধানের মদত আছে বলে অভিযোগ তুলছে বিজেপি। আকাইপুর পঞ্চায়েতের প্রধান উজ্জ্বলকুমার পাল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘সোমবার আমাদের এখানে টিকাকরণ কর্মসূচি ছিল। সাড়ে বারোশো টিকা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার কোনও কর্মসূচি ছিল না। সকালে ফোনে খবর পাই, দোকান থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি কি কখনও কোনও দোকান থেকে টিকা দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারি?’’