ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আশাকর্মীরা। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
আশাকর্মীদের লাগাতার কর্মবিরতির জেরে রবিবারের পাল্স পোলিয়ো কর্মসূচি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য দাবি, আশাকর্মীদের বিক্ষোভ-কর্মবিরতির জেরে পোলিয়ো কর্মসূচিতে কোথাও কোনও
সমস্যা হয়নি। কোথাও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, কোথাও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে।
যদিও আশাকর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁরা না থাকায় অনেক জায়গায় পোলিয়ো কর্মসূচিতে সমস্যা হয়েছে। একাধিক জায়গায় এএনএমদের দেখা যায় শিশুদের পোলিয়ো খাওয়াতে।
মাসিক ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া উৎসাহ ভাতা প্রদান, অতিরিক্ত কাজের উপযুক্ত ভাতা-সহ ২১ দফা দাবিতে গত ১ মার্চ থেকে রাজ্য জুড়ে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রায় ৬০ হাজার আশাকর্মী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাঁচ হাজারেরও বেশি আশাকর্মী কর্মবিরতিতে শামিল হয়েছেন। রবিবার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
শিশুদের পোলিয়ো খাওয়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা থাকে আশাকর্মীদের। এ দিন পোলিয়ো কর্মসূচি বয়কটের ডাকও দিয়েছিলেন তাঁরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, “কোনও অসুবিধাই হয়নি। আগে থেকেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহ স্বাস্থ্য দফতরের অন্য কর্মীদের এ কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে।”
এ দিন ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, জয়নগর, বারুইপুর-সহ বহু ব্লকেই বিক্ষোভ দেখান আশাকর্মীরা। জয়নগরে পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে কুলপি রোড অবরোধ করা হয়। পরে হাসপাতালে জড়ো হয়ে তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন। বারুইপুরে হরিহরপুর ব্লক হাসপাতালেও বিক্ষোভ চলে।
পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক ইসমত আরা খাতুন বলেন, “এটা আমাদের অধিকারের লড়াই। দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের দিয়ে যা কাজ
করানো হয়, তার উপযুক্ত পারিশ্রমিক মেলে না। সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। তাই নিজেদের প্রাপ্য বুঝে নিতে আন্দোলনে নেমেছি।” পোলিয়োর মতো কর্মসূচি বন্ধ করে আন্দোলন কেন? ইসমত আরা বলেন, “আমাদের এই কর্মসূচি পূর্ব ঘোষিত। পোলিয়ো কর্মসূচি তার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। সরকার আমাদের দাবি মেনে নিলে আবার আগের মতোই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ব।”
আশাকর্মীদের দাবিদাওয়া নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর দেখছে বলে জানান তিনি।