অপরাধীর শাস্তি হবে কবে, প্রশ্ন মৃতার ছেলের

২০১৭ সালের ৪ জুলাই ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাজ্যেশ্বর মাইতি আছে বসিরহাট জেলে। কিন্তু এখনও সাজা ঘোষণা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা চলছে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে।

Advertisement

নবেন্দু ঘোষ 

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোনও বয়সেই কি তবে যৌন নির্যাতনের হাত থেকে নিরাপদ নন মহিলারা? সন্দেশখালির গ্রামের ঘটনা ফের একবার তুলে দিয়েছিল সেই প্রশ্ন। যখন ষাট বছরের এক বৃদ্ধার গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে মারধর করে যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল রড, মদের বোতল। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল পাশের জঙ্গলে। পরে মারা যান তিনি।

Advertisement

২০১৭ সালের ৪ জুলাই ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাজ্যেশ্বর মাইতি আছে বসিরহাট জেলে। কিন্তু এখনও সাজা ঘোষণা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা চলছে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে। সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে। কয়েক মাসের মধ্যে সাজা ঘোষণা হতে পারে।

এ দিকে, মামলার নিষ্পত্তিতে দেরি হওয়ায় স্বস্তিতে নেই মহিলার পরিবার। বরং তাদের ভয়ে মহিলার আত্মীয়েরা এখন আর গ্রামে থাকেন না বলে জানালেন। নিহতের পরিবার দাবি করেছিল, ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির জড়িত। পুলিশ অবশ্য সে কথা মানেননি।

Advertisement

ঘটনার পর পর রাজ্য জুড়ে তোলপাড় চলেছিল। বহু মানুষ পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়ে সমবেদনা জানিয়েছিলেন। সুবিচারের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর কাউকে পাশে পান না, জানালেন নিহত মহিলার ছেলে।

হায়দরাবাদের ঘটনায় পুলিশের এনকাউন্টারে চার অভিযুক্তের মৃত্যুর ঘটনা সমর্থনই করছেন সন্দেশখালির গ্রামে মৃতের ছেলেমেয়েরা। তাঁদের আশঙ্কা, সাক্ষীর অভাবে আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে আসবে না তো ধর্ষণকারী! মৃতের ছোট ছেলে কলকাতা থেকে টেলিফোনে বলেন, ‘‘আমার মায়ের সঙ্গে রাজ্যেশ্বর যা করেছিল, পশুরাও এমন করে না। কিন্তু এখনও আইনি প্রক্রিয়া চলছে। জানি না কবে ওর সাজা হবে। আমরা চাই, ওর প্রকাশ্যে চরম শাস্তি হোক। অথবা এনকাউন্টার করা হোক। তবে জানি না, আইনের ফাঁক গলে ও বেরিয়ে আসবে কিনা। কারণ, অনেকেই এখন সাক্ষী দিতে অনীহা দেখাচ্ছেন।’’ বছর ষাটের বিধবা ওই মহিলা তাঁর ছোট ছেলে ও বৌমাকে নিয়ে থাকতেন একটা ছোট্ট ঘরে। তিন ছেলে অন্যত্র থাকতেন। তিন মেয়ে বিবাহিত। একটি ছোটখাট খাবারের দোকান চালাতেন মহিলা। ২০১৭ সালের ৩ জুলাই রাতে বাড়ি ফেরেন। ছোট ছেলে বাড়িতে ছিলেন না। স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। মহিলার বাড়ি ছিল মূল জনবসতি থেকে কিছুটা দূরে। নির্জন জায়গায। অভিযোগ ওঠে, পড়শি বছর পঞ্চান্নর রাজ্যেশ্বর ৪ তারিখ রাতে মহিলার ঘরে ঢোকে। ধর্ষণের চেষ্টা করে। মহিলা চিৎকার করলে তাঁর গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে দেয় আততায়ী। মহিলা নিস্তেজ হয়ে পড়লে যৌন নির্যাতন চালায়। পুলিশের অনুমান, হামলাকারীকে চিনে ফেলেছিলেন মহিলা। তাই অত্যাচার চালানোর পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে শরীরের মধ্যে লোহার রড, মদের বোতল ভেঙে ঢুকিয়ে দেয় আততায়ী। এরপরে বৃদ্ধাকে বাড়ির পাশের জঙ্গলের মধ্যে ফেলে রেখে যায়। পর দিন সকালে প্রতিবেশীরা দেখেন, জঙ্গলের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন তিনি। খুলনা হাসপাতাল থেকে পরে তাঁকে পাঠানো হয় কলকাতায়। ১ অগস্ট মারা যান তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement