মায়ের গয়না লোপাট করে গ্রেফতার ছেলে

বৃদ্ধার শেষ সম্বল বলতে ছিল কিছু সোনার গয়না। বাড়িতে একাই থাকেন তিনি। অন্ধের যষ্ঠীর মতো সে সব গয়না কী ভাবে সামলাবেন, সাতপাঁচ ভেবে ঘরেই মাটির মেঝে খুঁড়ে গয়নাগুলো ছোট্ট টিফিন বাক্সে রেখে পুঁতে রেখেছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০২:৩২
Share:

বৃদ্ধার শেষ সম্বল বলতে ছিল কিছু সোনার গয়না। বাড়িতে একাই থাকেন তিনি। অন্ধের যষ্ঠীর মতো সে সব গয়না কী ভাবে সামলাবেন, সাতপাঁচ ভেবে ঘরেই মাটির মেঝে খুঁড়ে গয়নাগুলো ছোট্ট টিফিন বাক্সে রেখে পুঁতে রেখেছিলেন তিনি।

Advertisement

এত করেও গয়না সুরক্ষিত থাকেনি। চুরির অভিযোগে বৃদ্ধা পুলিশের দ্বারস্থ হন। শেষমেশ যাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, তাতেও বৃদ্ধার মাথায় হাত। পুলিশের দাবি, বৃদ্ধার একমাত্র ছেলেই গয়না সরিয়েছিল। উদ্ধার হয়েছে গয়নাও।

ঘটনাটি হাবরা শহরের হাটথুবা ঘোষপাড়া এলাকার। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম বরুণকুমার নন্দী। সে যে সোনার দোকানে চোরাই গয়না বিক্রি করেছিল, তার মালিককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর নাম দিলীপ স্বর্ণকার, বাড়ি ঘোলা থানার মিলন গড় এলাকার পালপাড়ায়। তাঁর একটি গয়নার দোকান আছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধা ঝর্না নন্দীর স্বামী সুবলবাবু বেশ কিছু দিন আগেই মারা গিয়েছেন। তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েরা বিবাহিতা। তাঁরা বৃদ্ধার বাড়ির চত্বরেই আলাদা থাকেন। ছেলে বরুণ থাকে ঘোলা থানার পালপাড়ায়। সে জমি কেনাবেচার ব্যবসা করে।

ঝর্নাদেবী দিন কয়েক আগে ঘরে তালা দিয়ে গিয়েছিলেন বরুণের বাড়িতেই। মায়ের বাড়ি ফাঁকা আছে বলে বরুণ দু’দিন এসে কাটিয়ে যায় সেখানে। ১০ জুলাই বৃদ্ধা বাড়ি ফিরে দেখেন, গয়না লোপাট। বৃদ্ধার সন্দেহ গিয়ে পড়ে মেয়েদের উপরে। পুলিশ মেয়েদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এলাকার অন্য দাগি চোরদের উপরেও নজরদারি শুরু হয়। কারণ, সম্প্রতি হাবরা শহরে কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটে গিয়েছে। যে সব বাড়িতে চুরি হয়েছিল, সেই বাড়িতে তখন কেউ ছিলেন না। স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ ছিল দাগি দুষ্কৃতীদের উপরেই।

কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বৃদ্ধা যখন বাড়িতে ছিলেন না, সে সময়ে বরুণ এসে দু’দিন কাটিয়ে গিয়েছে। বরুণকে ধরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতেই যে চুরির কথা কবুল করে বলে তদন্তকারীদের দাবি। মায়ের জমানো ১৫ গ্রাম সোনার গয়না বেচে সে কিছু জমিও কিনেছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

সব জেনে বৃদ্ধার আক্ষেপ, ‘‘কী ছেলেই না পেটে জন্ম ধরেছি!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement