বেহাল: এখনও এই অবস্থা আছে স্কুলের কিছু ঘর। নিজস্ব চিত্র।
স্কুল চালু হয়েছে। কিন্তু দেড় বছর বন্ধ থাকায় পরিকাঠামোগত যে সংস্কার দরকার ছিল, তার কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে ওই অবস্থাতেই চলছে পঠনপাঠন। এমনই পরিস্থিতি পাথরপ্রতিমার গদামথুরা হরিপ্রিয়া হাইস্কুলে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিভাগীয় দফতরে জানালেও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষের।
আমপান ও ইয়াসে প্রচুর ক্ষতি হয় স্কুলের। স্কুল ভবনের পাশে একটি প্রাচীর ভেঙে পড়ে। এখনও সেটি ভাঙা। স্কুলের দোতলা ভবনের উপরে চারটি শ্রেণিকক্ষের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি উড়ে যায় ঝড়ে। তার মধ্যে দু’টি শ্রেণিকক্ষে অ্যাসবেস্টস লাগানো হয়েছে। তবে বাকি দু’টি শ্রেণিকক্ষের ছাদ এখনও ফাঁকা। ছাদে ওঠার সিঁড়ির উপরের ছাউনিও ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল। তা-ও সারানো হয়নি। ফলে বৃষ্টি হলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময়ে ভিজতে হবে পড়ুয়াদের।
পর পর দুর্যোগে স্কুলের প্রায় সমস্ত ঘরের জানলার পাল্লা ভেঙে গিয়েছে। সেগুলি সারানো হয়নি এখনও। ঝড়ে স্কুলের ছাদে বসানো জলের ট্যাঙ্কটি উড়ে যায়। শৌচালয়ে জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া, স্কুলের পানীয় জলের দু’টি নলকূপই অকেজো হয়ে রয়েছে।
স্কুল সূত্রের খবর, অনেক বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিলেরও মেরামত প্রয়োজন। প্রত্যন্ত এলাকার এই স্কুলে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই আসে সাইকেলে। কিন্তু স্কুলে সাইকেল রাখার জায়গায় কোনও ছাউনি নেই। মিড ডে মিল খাওয়ার জন্যও আলাদা কোনও ছাউনি নেই।
স্কুলে শিক্ষকও কম। পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় ৯৫০ জন। এর মধ্যে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী ৪২০ জন। কিন্তু শিক্ষক মাত্র ১২ জন। ২০১৩ সাল থেকে স্কুলটিতে উচ্চমাধ্যমিকের পঠনপাঠন শুরু হয়। কলা ও বিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক বিভাগের জন্য কোনও শিক্ষকই নিয়োগ হয়নি।
প্রধান শিক্ষক প্রণব মাটিয়া বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। স্কুল ভবনের পরিকাঠামোগত বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। টাকার অভাবে সমাধান করা যাচ্ছে না। অর্থ বরাদ্দের জন্য শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি।” তাঁর দাবি, স্কুলের যা পরিস্থিতি, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু হলে সমস্যা আরও বাড়বে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, আমপান-ইয়াসের জেরে স্কুল ভবন যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই অনুপাতে অর্থ বরাদ্দ হয়নি। বিষয়টি শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছে। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা অবশ্য বলেন, “ওই স্কুলের শ্রেণিকক্ষ সংস্কারের জন্য ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এরপরেও কোনও সমস্যা হলে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।”