ফাইল চিত্র।
ব্যবসায়ীর থেকে তোলা চেয়েও না পাওয়ায় শুরু হয়েছিল বচসা। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছতেই তাদের লক্ষ্য করে বোমা-গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, তার পরে তৃণমূল কাউন্সিলরের কার্যালয়ের সামনে গিয়েও কয়েকটি বোমা ছোড়া হয়। শনিবার রাতে, পানিহাটির ঘটনা।
আড়াই মাস আগে প্রকাশ্যে পানিহাটির শাসক দলের কাউন্সিলরকে গুলি করে খুন করা হয়। তার পরে এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা-গুলি চালানো এবং এক কাউন্সিলরের অফিসের সামনে বোমাবাজির ঘটনায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনায় দাগি দুষ্কৃতী বিশু কর্মকার ওরফে চোর বিশু, সাগর দাস, শুভ সরকার ও পাপাই মজুমদারকে গ্রেফতার করেছে খড়দহ থানার পুলিশ। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (মধ্য) আশিস মৌর্য বলেন, “ওদের সঙ্গে আর কারা জড়িত, কী উদ্দেশ্যে হামলা— তা জানতে ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” যে গাড়িতে করে দুষ্কৃতীরা এলাকায় ঢুকেছিল, সেটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বিভিন্ন বোমাবাজির নেপথ্যে ওই দুষ্কৃতীদের আসল লক্ষ্য কে ছিলেন, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার রাতে পানিহাটির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের লালমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় রোডে এক ব্যবসায়ীর কাছে আসে সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পাওয়া বিশু ও তার সঙ্গীরা। অভিযোগ, বোমার ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে বিশু ওই ব্যবসায়ীর কাছে তোলা চায়। তিনি তোলা দিতে অস্বীকার করলে শুরু হয় দু’পক্ষে বচসা। সূত্রের খবর, ওই ব্যবসায়ী ফোন করে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়ন্ত দাস ওরফে গোবিন্দকে এ বিষয়ে জানালে বিশুর সঙ্গে ফোনেই তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। এর মধ্যে খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ এলে তাদের লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। এর পরেই বি টি রোডের উপরে ধানকল মোড়ে জয়ন্তের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে পরপর পাঁচটি বোমা ছোড়ে তারা। তাতে এক দলীয় কর্মী জখম হন।
ঘটনার সময়ে কার্যালয়ে উপস্থিত কর্মী-সমর্থকেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা ক্যারাম খেলে বাইরে বসেছিলেন। সেই সময়ে গাড়িটি সেখানে আসে ও এক জন নেমে বোমা ছুড়তে শুরু করে। রবিবার গিয়ে দেখা গেল, ওই অফিসের দেওয়ালে বোমার দাগ, বাইরে পড়ে বোমার স্প্লিন্টার। বোমার তীব্রতায় ভেঙে গিয়েছে একটি বেঞ্চ। এই নিয়ে ওই কাউন্সিলরের অফিসের সামনে চার বার বোমাবাজির ঘটনা ঘটল। জয়ন্ত বলেন, “কী কারণে বোমা মারল, কেনই বা আমার উপরে আক্রমণের চেষ্টা— কিছুই জানি না।” তবে বিশুর সঙ্গে কী নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় তাঁর, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি জয়ন্ত।
পানিহাটির তৃণমূল নেতা কমল দাস বলেন, “সমাজবিরোধীদের কাছে পানিহাটি মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। অনুপম-খুনের পরে ফের আমাদের কার্যালয়ে বোমাবাজি করা হল। প্রশাসনকে আরও শক্ত হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।