solar panel

শুরু হচ্ছে সৌর প্রকল্পের কাজ, আলো জ্বলবে ঘোড়ামারা দ্বীপে

ইতিমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রকল্পের আধিকারিকেরা। ঘোড়ামারা মিলন বিদ্যাপীঠের মাঠে শুরু হয়েছে প্রকল্পের কাজ। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মাপজোকের কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

সমরেশ মণ্ডল

ঘোড়ামারা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩৬
Share:

সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে ঘোড়ামারা দ্বীপে শুরু হচ্ছে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। কেন্দ্র সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের তরফে সম্প্রতি এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা।

Advertisement

আইআইটি খড়গপুর ও সৌরবিজ্ঞানী শান্তিপদ গণচৌধুরীর যৌথ উদ্যোগে ঘোড়ামারায় এই প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের তরফে ওড়িশা, অসম, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের চারটি বিচ্ছিন্ন দীপাঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে। তার মধ্যে সব থেকে বড় প্রকল্পটি তৈরি হচ্ছে ঘোড়ামারা দ্বীপে। প্রায় ২৫০ কিলোওয়াট পাওয়ার প্লান্ট থেকে এই দ্বীপের সমস্ত পরিবারকে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

ঘোড়ামারা দ্বীপের তিন দিকে নদী, এক দিকে বঙ্গোপসাগর। পর পর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্রমশ ছোট হয়েছে এই দ্বীপ। বর্তমানে ১১২৫টি পরিবারের বাস।

Advertisement

জনসংখ্যা হাজার পাঁচেক। বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপে এখনও পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ। কেউ কেউ নিজের খরচে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছেন। তবে সন্ধের পরে দ্বীপের অধিকাংশ এলাকাই অন্ধকারে ডুবে যায়।

উদ্যোক্তারা জানান, প্রকল্প রূপায়িত হলে এলাকার সব ঘরেই পৌঁছে যাবে আলো। ১৮ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পাবে পরিবারগুলি। প্রতিটি পরিবার চারটি করে আলো, একটি পাখা ও একটি টিভি চালাতে পারবে। ইউনিট প্রতি ৪-৫ টাকা করে দিতে হবে। পরিবারগুলিকে। সৌরশক্তির সাহায্যে পানীয় জল তোলার ব্যবস্থাও থাকবে। ই-রিকশা চলবে এলাকায়। দ্বীপের রাস্তাঘাট, পঞ্চায়েত দফতর, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাজার এলাকায় পথবাতিও লাগানো হবে। বিদ্যালয়গুলিতেও আলো, পাখার ব্যবস্থা করা হবে। ঘোড়ামারা দ্বীপ থেকে কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাট পর্যন্ত পর্যন্ত একটি সৌরশক্তি চালিত বোটও চালু হবে। জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ মিলবে।

ইতিমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রকল্পের আধিকারিকেরা। ঘোড়ামারা মিলন বিদ্যাপীঠের মাঠে শুরু হয়েছে প্রকল্পের কাজ। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মাপজোকের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি পাঁচ বছরের জন্য দেখাশোনা করবে আইআইটি খড়গপুর। কয়েক মাসের মধ্যেই বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদী তারা।

ঘোড়ামারা সৌরপ্রকল্প রূপায়ণ কমিটির চেয়ারম্যান, বিজ্ঞানী শান্তিপদ গণচৌধুরী বলেন, “সুন্দরবনের অনেক জায়গায় প্রচলিত শক্তি পৌঁছে গিয়েছে। তবে বিচ্ছিন্ন, দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত ঘোড়ামারা দ্বীপে প্রচলিত শক্তি নিয়ে যাওয়া প্রযুক্তিগত ভাবে কঠিন। তাই ঘোড়ামারা দ্বীপে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করার জন্য সুপারিশ করেছি। সব থেকে বড় আধুনিক সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প এখানে চালু হবে। দ্রুত বাস্তবায়িত হবে কাজ।”

স্থানীয় বাসিন্দা সুকদেব মাইতি বলেন, “প্রকল্পের কাজের জন্য এলাকায় মাপজোক শুরু হয়েছে। এই ব্যবস্থা চালু হলে খুবই ভাল হবে। এই দ্বীপ আলোকিত হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে।” ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জীব সাগর বলেন, “দ্বীপ এলাকা বহু বছর পরে আলোকিত হবে। আমরা খুবই খুশি।”

স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “বিদ্যুৎহীন ঘোড়ামারা দ্বীপে এ বার আলো জ্বলবে। বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বিদ্যুৎ পৌঁছনো সম্ভব ছিল না। তাই কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে সোলার প্লান্ট বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে শতাধিক পরিবার উপকৃত হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নও ঘটবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement