ফাইল চিত্র।
শাহজাহান শেখ কোথায় আছেন, সে প্রশ্নের উত্তর নেই ইডির কাছে। তবে বিরোধীদের দাবি, শাহজাহান কোথায় লুকিয়ে আছেন, তা তাঁর ঘনিষ্ঠেরা জানেন। সেই ঘনিষ্ঠদের তালিকায় ছিলেন সন্দেশখালি-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবু। এলাকাতেও তিনি শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তবে শনিবার সেই শিবুই এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, শাহজাহান কোথায় আছেন তা তিনি জানেন না। তাঁর দাবি, এটা বিরোধীদের অপপ্রচার। ঘটনাচক্রে, শিবু যখন এ কথা বলছেন, তখন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, শাহজাহান অন্যায় করেছেন।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে প্রথম বার অভিযান চালায় ইডি। কিন্তু বাড়িতে শাহজাহানের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তার পর ২২ দিন কেটে গিয়েছে। এ মধ্যে আরও এক বার ইডি ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। তবে এখনও অধরা শাহজাহান। পাশাপাশি, এত দিন ‘নিখোঁজ’ ছিলেন শিবুও। এ বার তিনি প্রকাশ্যে এসে বললেন, ‘‘আমি দলের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তার উপর আমার ছেলে অসুস্থ, তাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিল। তাই হয়তো আমাকে পাননি।’’ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, শাহজাহান কোথায় আছেন, তা তিনি জানেন না। শিবু বলেন, ‘‘শাহজাহানভাই কোথায় আছেন আমি জানি না। যাঁরা বলছে এ সব কথা, তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন। তাঁরাই বলতে পারবেন। বিরোধীরা আমার নামে অপপ্রচার করছে। শাহজাহানভাই এক দিন ঠিক সামনে আসবেন, তখনই জানাবেন কোথায় ছিলেন তিনি। আমার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয়নি।’’
শুক্রবারই রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি দাবি করেছিলেন যে, শাহজাহান অসুস্থ। চিকিৎসা করাতে তিনি রাজ্যের বাইরে আছেন। অখিলের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে শিবু বলেন, ‘‘উনি মন্ত্রী, আমার থেকে বেশি জানতে পারেন। আমি জানি না।’’
৫ জানুয়ারির পর গত ২৪ জানুয়ারি আবার ইডির দল সন্দেশখালিতে যায়। তালা ভেঙে তারা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। ওই বাড়িতে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কিছু ‘গুরুত্বপূর্ণ’ নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। আরও খবর, ইডির ‘সিজার লিস্ট’-এ নাম আছে শিবুর।
ইডির ‘সিজার লিস্ট’-এ তাঁর নাম থাকা নিয়ে শিবুকে প্রশ্ন করা হলে, তদন্তে সব রকম সাহায্যের ‘আশ্বাস’ দেন তিনি। ৫ তারিখ ইডির উপর হামলার ঘটনা নিয়ে বলতে গিয়ে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ ওই তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘ইডি ওই দিন আসবে আমরা জানতাম না। প্রশাসনও বলছে তাদের কাছে খবর ছিল না। দাদা (শাহজাহান) খুব জনপ্রিয়। তাই এলাকাবাসীই খবর পেয়ে জড়ো হয়েছিলেন।’’ সে দিনের জমায়েতের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই জানান শিবু।