সভাস্থলের ঠিক পাশে এই পোস্টার ঘিরে বিতর্ক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে অমিত শাহের মন্তব্যে হয়েছিল ‘অভিমান’। সেই অভিমানেই ফের একবার নিজেকে আড়ালে রাখলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। মঙ্গলবার গাইঘাটা বাজারে ছিল বিজেপির যোগদান মেলা কর্মসূচি ও জনসভা। শান্তনুর বাড়ি থেকে সভাস্থলের দূরত্ব ছিল মেরেকেটে সাড়ে তিন কিলোমিটার। কিন্তু সভায় ছিলেন না সাংসদ।
এ দিনের সভায় ছিলেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য, রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি রীতেশ তিওয়ারি-সহ জেলা নেতৃত্ব। বক্তারা মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে কথা বললেও শান্তনুর নাম তাঁদের মুখে শোনা যায়নি। কেন সভায় গেলেন না? শান্তনু বলেন, ‘‘আমাকে কেউ আমন্ত্রণ করেননি।’’ বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘সাংসদকে এ দিনের কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। উনি ব্যস্ত মানুষ। সব সময় দলীয় কর্মসূচিতে তাঁর পক্ষে আসা সম্ভব না-ও হতে পারে।’’
শান্তনু প্রথমে আমন্ত্রণ পাননি বললেও পরক্ষণেই মন্তব্য করেন, ‘‘আগে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠাকুরনগরে এসে সিএএ নিয়ে তাঁর বক্তব্য জানাবেন। তারপর দলীয় কর্মসূচি নিয়ে ভাবব।’’ রবিবার বোলপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এতবড় অভিযান করা সম্ভব নয়। কেবল বিধি প্রণয়নই বাকি আছে। করোনাভাইরাসের টিকা এসে গেলে এবং করোনার চক্র (সাইকেল) ভেঙে গেলে আমরা এই বিষয়ে ভাবব।’’ শাহের এই বক্তব্যে শান্তনু-সহ মতুয়াদের একটা বড় অংশ হতাশ। শান্তনু অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতিও। সেই প্রেক্ষিতে শান্তনুর সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং একের পর এক দলীয় কর্মসূচি এড়িয়ে যাওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সাম্প্রতিক সময়ে শান্তনুকে বনগাঁ মহকুমার গোপালনগরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জনসভায় এবং কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের বনগাঁ শহরের দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায়নি।
এ দিনের সভায় বিজেপি নেতারা অবশ্য নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কথা বলেছেন। সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শমীক বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব আইনের দাবি তুলেছিলেন, এই আইনের সুরক্ষা পেতে চেয়েছিলেন এই অঞ্চলের নমঃশূদ্র সমাজের মানুষ, মতুয়া সমাজের মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন এই আইন মানি না।’’ এ দিন সকালে সভাস্থলে এবং মঞ্চে কিছু পোস্টার দেখা যায়। তাতে লেখা ছিল বিভিন্ন দুর্নীতিতে যুক্ত মণ্ডল সভাপতি দূর হটো, আমপান দুর্নীতিতে যুক্ত যুব নেতা দূর হটো। আদি বিজেপির নাম দিয়ে পোস্টার পড়েছিল। এ বিষয়ে শঙ্কর বলেন, ‘‘তৃণমূল পোস্টার মারার অপসংস্কৃতি আমদানি করেছে। লাভ হবে না।’’ তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘আমরা এই সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করি না। এটা ওদের কোন্দলের ফল।’’