প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে বনগাঁকে আলাদা সাংগঠনিক জেলা হিসেবে ঘোষণা করল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। বুধবার বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতির নামও ঘোষণা করা হয়েছে। সভাপতি হয়েছেন বিজেপি নেতা মনস্পতি দেব। তিনি বনগাঁর বিজেপির সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এতদিন বনগাঁ মহকুমা ছিল দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার মধ্যে। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বনগাঁকে আলাদা সাংগঠনিক জেলা হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে নেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই দলের অন্দরে এর প্রক্রিয়া চলছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছিল না। নাগরিকত্ব আইন কার্যকর না হওয়া নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। দলীয় নানা বিষয়কে কেন্দ্র করেও বারাসত সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে শান্তনুর দূরত্ব বাড়ছিল। সেকারণেও শান্তনু দলীয় কর্মসূচি এড়িয়ে চলছিলেন। শান্তনু প্রকাশ্যেই নাগরিকত্ব আইন দ্রুত কার্যকর না হওয়াতে ক্ষোভ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ঠাকুরনগরে এসে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ নিয়ে তাঁর মতামত জানাতে হবে। দিন কয়েক আগে শান্তনুর সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্য নেতৃত্ব। সেখানে তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয় ১৯ বা ২০ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠাকুরবাড়িতে এসে নাগরিক আইন নিয়ে তাঁর মতামত জানাবেন। ওই বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয় নিয়েও শান্তনুর সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের আলোচনা হয়। তারপরই রাজ্য নেতৃত্ব বনগাঁকে আলাদা সাংগঠনিক জেলা হিসেবে ঘোষণা করে।
বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, মূলত শান্তনুর দাবি মেনেই নতুন সাংগঠনিক জেলা করা হয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শান্তনুর ক্ষোভ কমাতে তাঁরই ঘনিষ্ঠ এবং ঠাকুরনগরের বাসিন্দা মনস্পতিকে সভাপতি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার শান্তনু ঠাকুরবাড়িতে নতুন সভাপতিকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। মনস্পতি বলেন, “আমার লক্ষ্য দলকে আরও শক্তিশালী করা এবং দলীয় কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা।” নতুন সাংগঠনিক জেলা তৈরির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “বনগাঁকে সাংগঠনিক জেলা করা হোক, এই প্রস্তাব আমি দলের কাছে দিয়েছিলাম। এর ফলে নির্বাচন পরিচালনা করতে এবং দলকে সাংগঠনিক দিক থেকে মজবুত করতে সুবিধা হবে।”
বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে বিজেপি কর্মীদের একাংশ প্রতিবাদ মিছিল করেছেন। তাঁরা শান্তনুর কাছে ওই দাবিতে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন। বিজেপির এক নেতা বলেন, “শান্তনুর সঙ্গে শঙ্করের দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছিল। নতুন সাংগঠনিক জেলা হওয়াতে আখেরে দলেরই লাভ হবে।” কিন্তু বারাসত সাংগঠনিক জেলা কমিটিতে বনগাঁর কয়েকজন সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, মণ্ডল সভাপতির পদে ছিলেন। তাঁদের এবার কী হবে? মনস্পতি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে।”