Kakdwip

চার ঘণ্টা জলে ভেসে থাকার পর উদ্ধার কাকদ্বীপের আট মৎস্যজীবী! নিখোঁজ ন’জনকে খুঁজতে পাঠানো হচ্ছে ডুবুরি

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নামখানা ঘাটে উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের নিয়ে আসা হয়। নামখানা ঘাটেই রাখা ছিল অ্যাম্বুল্যান্স। তাতে করে আট মৎস্যজীবীকে পাঠানো হয় কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:০০
Share:

সমুদ্রে উল্টে যায় মৎস্যজীবীদের ট্রলার। —ফাইল চিত্র।

শুক্রবার রাত ২টো। সমুদ্রে ভাসছিল মাছ ধরার একটি ট্রলার। আচমকা দমকা হাওয়া শুরু। লন্ডভন্ড হয়ে গেল সব কিছু! সমুদ্রের জলে উল্টে যায় ওই ট্রলারটি। তাতে থাকা আট জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও নিখোঁজ ন’জন। তাঁদের উদ্ধার করতে পাঠানো হচ্ছে ডুবুরি। উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানেই চিকিৎসাধীন তাঁরা। তবে এখনও মৎস্যজীবীদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। কী ভাবে বেঁচে গেলেন, সেই অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে আঁতকে উঠছেন তাঁরা।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারে গভীর রাতে বাঘের চর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের ভিতর উল্টে যায় একটি ট্রলার। এফবি গোবিন্দ নামে ট্রলারটিতে চেপে ১৭ জন মৎস্যজীবী গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। ট্রলার উল্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সমুদ্রে ভেসে যান মৎস্যজীবীরা। চার ঘণ্টারও বেশি সময় জলে ভেসে থাকার পর একটি ট্রলার দেখে চিৎকার করেন তাঁরা। সেই চিৎকার শুনে আট জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নামখানা ঘাটে উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের নিয়ে আসা হয়। নামখানা ঘাটেই রাখা ছিল অ্যাম্বুল্যান্স। তাতে করে আট মৎস্যজীবীকে পাঠানো হয় কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে। সমীর মণ্ডল নামে এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘‘রাত তখন ২টো। আচমকা দমকা হাওয়ার কারণেই সমুদ্রের মধ্যে আমাদের ট্রলারটি উল্টে যায়। আমরা সকলেই ভেসে গিয়েছিলাম। তবে কয়েক জন ট্রলার থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলাম। বাকিরা আটকে যায়। চার ঘণ্টা জলের মধ্যে ভেসেছিলাম জলের মধ্যে।’’

Advertisement

শ্রীনিবাস দাস নামে অন্য এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘‘কেবিন থেকে আমরা কে কোথায় ছিটকে গিয়েছিলাম বলতে পারব না। কোনওক্রমে ভেসেছিলাম জলে। তার পর সকালের দিকে একটি ট্রলার দেখে চিৎকার করি। তারা আমাদের দেখতে পেয়ে জল থেকে উদ্ধার করে।’’

অন্য দিকে, যত সময় গড়াচ্ছে ততই উৎকণ্ঠা বাড়ছে নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের পরিবার-পরিজনদের। উল্টে যাওয়া ট্রলারটিকে উদ্ধার করতে পাঠানো হচ্ছে তিন জন ডুবুরি। কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘গভীর রাতে আচমকাই সমুদ্রে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। সেই কারণেই ট্রলারটি উল্টে যায়। আশপাশের ট্রলারগুলির মৎস্যজীবীরা এই ঘটনা দেখতে পান। তাঁরা আট জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করেছেন। এখনও ৯ জন মৎস্যজীবী নিখোঁজ রয়েছেন।’’

মৎস্যজীবীদের অনুমান, বাকিরা ওই ট্রলারের ভেতরে আটকে পড়েছেন। ট্রলারটিকে সোজা করা হয়েছে। কিন্তু চারপাশে জাল থাকার কারণে ট্রলারের ভেতরে তল্লাশি করা যাচ্ছে না। ট্রলারটিকে উপকূলের দিকে টেনে আনা হচ্ছে। বর্তমানে ট্রলারটি বকখালি থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে মৎস্যজীবী সংগঠনের তরফে। উপকূলে টেনে আনার পরই তার মধ্যে কেউ আটকে আছেন কি না জানা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement