বিড়ি বেঁধে পড়তে বসত সবুজ

হিঙ্গলগঞ্জ হাইস্কুলের ছাত্র সবুজের বাড়ি স্থানীয় ঘোষপাড়ায়। আবৃত্তি, ক্যুইজে ব্লকের একাধিক পুরস্কার পাওয়া সবুজ গত বছর স্কুলের সেরা ছাত্রের সন্মান পেয়েছিল। পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ দেখে স্কুলের শিক্ষকেরা ক্লাস ছুটির পরে তাকে নিয়ে কোচিং করাতেন। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা  

হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৯
Share:

হাতে-হাতে: মায়ের সঙ্গে সবুজ। নিজস্ব চিত্র

ভোরে উঠে মায়ের সঙ্গে বিড়ি বাঁধার কাজ সামলায় সবুজ। তারপরে তার পড়াশোনা। এই পরিস্থিতিতেও মাধ্যমিকে ভাল ফল করেছে হিঙ্গলগঞ্জের সবুজ ঘোষ। ছ’টি বিষয়ে লেটার পেয়েছে।

Advertisement

হিঙ্গলগঞ্জ হাইস্কুলের ছাত্র সবুজের বাড়ি স্থানীয় ঘোষপাড়ায়। আবৃত্তি, ক্যুইজে ব্লকের একাধিক পুরস্কার পাওয়া সবুজ গত বছর স্কুলের সেরা ছাত্রের সন্মান পেয়েছিল। পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ দেখে স্কুলের শিক্ষকেরা ক্লাস ছুটির পরে তাকে নিয়ে কোচিং করাতেন।

সবুজের বাবা বিকাশ ঠিকা শ্রমিক। ভাঙাচোরা দু’টো মাত্র ঘরে বাবা-কাকা সহ পরিবারের ১২ জনের বাস। তা দেখে সবুজের পড়াশোনার জন্য পড়শি রণজিৎ ঘোষ তাঁর একটি ঘর ছেড়ে দেন। ওই ঘরে চৌকির ব্যবস্থা করে দেন প্রতিবেশী কার্তিক সরকার। চারজন শিক্ষক তাকে পড়াতেন। সবুজের ভাল ফলে খুশি স্কুলের শিক্ষক-সহ স্থানীয় বহু মানুষ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ঘোষপাড়ায় গিয়ে খোঁজ করতেই সকলে দেখিয়ে দিলেন সবুজের ঘর। তখনও মায়ের সঙ্গে বিড়ি বাঁধছে সবুজ। তার কথায়, ‘‘চাকার অভাবের মা অষ্টম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি। সে কারণেই আমাকে বড় করতে সব সময়ে চেষ্টা করে গিয়েছেন।’’ বিকাশ ও মিনার এক মাত্র সন্তান সবুজের কথায়, ‘‘আমাকে পড়াশোনা শিখিয়ে বড় করতে স্কুলের শিক্ষকদের মতো মা-বাবার চেষ্টা অপরিসীম।’’ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে আইএএস হতে চায় সবুজ।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধন ঘোষ বলেন, ‘‘সবুজ অত্যন্ত মেধাবী। কখনও স্কুল কামাই করেনি। পড়াশোনার প্রতি বরাবরই প্রবল আগ্রহ ওর। আমাদের সকলকে গর্বিত করেছে। সবুজের এগিয়ে যাওয়ার পথে আমরা আছি।’’

মিনার কথায়, ‘‘বিড়ি বাঁধতে যত কষ্টই হোক, আমার কাজে সাহায্য করে তবেই রোজ পড়তে বসত ও। এখন কী ভাবে যে ওর পড়ার খরচ সামলাবো, বুঝতে পারছি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement